তদবিরে যাকে-তাকে ‘কী পয়েন্টে’ বসানো হচ্ছে: ফিরোজ রশীদ

কাজী ফিরোজ রশীদরাজনৈতিক আদর্শ যাচাই না করে অনেককে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘‘আজকে এত সমর্থন আওয়ামী লীগের। সবখানে আওয়ামী লীগ। আমাদের ভয় লাগে—কোথায় কাকে রাখতেছেন, তাদের হিসাব করছেন? এই ছেলেটি কখন ছাত্রলীগ করেছে, একদিন জয়বাংলার স্লোগান দিয়েছে। তার বাবা-দাদা আওয়ামী লীগ করছেন? আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান? তদবিরে যাকে-তাকে ‘কী পয়েন্টে’ বসিয়ে দিচ্ছেন।’ সময় দেওয়া হলে সংসদে তাদের পরিচয় তুলে ধরার কথাও জানান তিনি।

রবিবার (১৫ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে আনা সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। গত সোমবার (৯ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানাতে ১৪৭ বিধিতে সাধারণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার সাড়ে চার ঘণ্টা আগে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল উল্লেখ করে ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘‘মনি ভাইয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সেদিন আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১১টায় আমাদের ডাকলেন। চারদিকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের একটি কথা মাত্র বলেছিলেন, ‘তোমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তোমাদের যুবলীগের একটি ছেলেও যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আমি এক্সপেল করে দেবো।’ এরপর মনি ভাইয়ের সঙ্গে কথা বললেন। আমরা নিচে দাঁড়িয়ে থাকলাম। মনি ভাই নিচে নেমে একটি সিগারেট ধরিয়ে চলে গেলেন। একটা কথাও বললেন না। মুখটা মলিন ছিল। কী ষড়যন্ত্র ছিল? যেটা বঙ্গবন্ধু মনি ভাইকে বললেন। পরদিন সেটা আমরা জানতে পারতাম—যদি বেঁচে থাকতেন বঙ্গবন্ধু।’’

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের ঘটনায় কমিশন গঠনের কথা বলে তিনি বলেন, ‘আজ পর্যন্ত আপনারা একটি কমিশন গঠন করতে করলেন না। যারা আত্মস্বীকৃত খুনি তাদের বিচার করতে পারছি। কিন্তু এর পেছনে কী ছিল?’

২৫ মার্চের একটি ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘‘ওই সময় আমরা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ক্যাম্পে আছি। থমথমে পরিবেশ। আমরা বঙ্গবন্ধুর বাসায় গেলাম। তিনি নিচে নেমে এলেন। বললেন, ‘তোমরা যাও। তোমাদের সব ব্যবস্থা আমি করেছি। যুদ্ধের প্রস্তুতি নাও। ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হবে।’ বঙ্গবন্ধু তো প্রথম রাতেই যুদ্ধের ঘোষণা করে দিয়েছেন। মানুষ ঘোষণার কথা বলে একটি অস্বস্তি সৃষ্টি করতে চায়।’’