বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর আবেদনের বিষয়ে রবিবার (৯ মে) বিকাল ৪টায় কথা বলবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
এর আগে সকালে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর আবেদনের নথি আইন বিভাগের সচিবের দফতর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মতামত সংবলিত নথিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাবলিক রিলেশন্স অফিসার (মন্ত্রীর দফতর) ড. মো. রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকদের জানান, সকাল ১০টায় তার একান্ত সচিবের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে ফাইলটি পাঠানো হয়েছে। তবে ফাইলে কী লেখা হয়েছে তা তিনি জানাননি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ প্রসঙ্গে আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘২০২০ সালের ২৫ মার্চ প্রথম দিয়েছিলাম। এরপর ছয় মাস করে আরও দুইবার বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার মেয়াদ বহাল আছে। আমাদের অনুরোধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।'
এর আগে গত ৫ মে রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। এ সময় তিনি মন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসভবনে যান। সেখানে তিনি ওই আবেদনপত্র হস্তান্তর করেন।
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে বিএনপি। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নির্ধারণের পাশাপাশি গুছিয়ে আনা হয়েছে পারিবারিক অন্যান্য প্রস্তুতিও। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য নিয়োজিত চিকিৎসকেরা দফায় দফায় তার শারীরিক পরীক্ষা ও মানসিক অবস্থা নিরীক্ষা করছেন। তবে যেহেতু তিনি শর্ত সাপেক্ষে মুক্তিতে আছেন, এ কারণে সরকার অনুমতি দিলেই কেবল বিদেশে রওনা করতে পারবেন।
সোমবার (৩ মে) মধ্যরাত পর্যন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিএনপির উচ্চপর্যায়ে কয়েকজন ও খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিন মধ্যরাতে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে উনার চিকিৎসকেরা বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত না হওয়ায় খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি নেই। আর একইসঙ্গে পারিবারিক ও দলীয়ভাবেও দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার কথা জোর দিয়ে বলা হয়েছে।
সোমবার (৩) মে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার দলের নেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে কথা বলেছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে বিদেশে নেওয়ার আবেদন করার পর কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় সোমবার বিএনপি মহাসচিব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। বিশেষ করে, সোমবার বিকালে খালেদা জিয়াকে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে এভার কেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে স্থানান্তর করার বিষয়টি অবহিত করেন।
গত ২৭ এপ্রিল রাতে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। গত সোমবার বিকালে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
এর আগে ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওইদিন বিকালে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন...
‘স্বাধীনভাবে’ উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার প্রস্তুতি সম্পন্ন, অনুমতির অপেক্ষা
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরিবারের আবেদন
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল: ডা. জাহিদ