চীনের দ্বিতীয় দফা উপহারের ছয় লাখ করোনার ভ্যাকসিন আজ রবিবার (১৩ জুন) বিকালে ঢাকায় এসে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত চীনের সিনোফার্মের তৈরি ছয় লাখ ডোজ ভ্যাকসিনের চালানটি বিকাল ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে এসে পৌঁছাবে বলে আমরা আশা করছি। এটি নির্ভর করবে আবহাওয়ার ওপর, কিন্তু এটি এসে যাচ্ছে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করতেই পারি।’
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে হিসাব করলে এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে। জুনে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত শয্যা খালি থাকছে না। গত কিছু দিনে আমরা খেয়াল করেছি, সমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার বেড়ে গেছে। সেই জেলাগুলোকে তিনটি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ক্লাস্টারে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর। সেখানে শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের বেশি। দ্বিতীয় ক্লাস্টারে আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও নওগাঁ। তৃতীয় ক্লাস্টারে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা। এই জেলাগুলোর হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রয়েছে, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা অনুরোধ করবো, মৃদু উপসর্গ দেখা দিলেই যেন প্রত্যেকে হাসপাতালে যান।’
তিনি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৬২৪টি নমুনা পরীক্ষা বিপরীতে সংক্রমণের হার ১৪ শতাংশের বেশি ছিল। মৃত্যুর হার এক দশমিক ৫৯ আছে। ৫ থেকে ১১ জুন সারাদেশে ২৬ হাজার ১৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যা আগের সাত দিনের তুলনায় ১০ হাজারের বেশি। আগের সপ্তাহের তুলনায় শনাক্ত হয়েছেন চার হাজার জনের বেশি। পূর্ববর্তী সপ্তাহের তুলনায় ২৬ জন বেশি মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে একটু মনোযোগী হলে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক মৃত্যু আমরা প্রতিরোধ করতে পারি। এই সাত দিনে সংক্রমণের চিত্রে একটি স্থিতি অবস্থা দেখতে পাচ্ছি, যা ঊর্ধ্বমুখী। এটি কমার কোনও লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না।’
‘সীমান্ত ছাড়াও কিছু কিছু জেলায় পরীক্ষায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে, যেমন: ফরিদপুর। কম পরীক্ষা হচ্ছে বলেই শতকরা হার বেশি দেখা যাচ্ছে’—বলেন নাজমুল।
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেসব ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার চাপ বেশি সেখান থেকে তুলনামূলক চাপ কম এমন ল্যাবে নমুনা পাঠানো হবে। গতকাল রাজশাহীতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কিছু নমুনা বগুড়ায় পাঠিয়ে দিতে। এই মুহূর্তে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। সে জন্য উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর উপস্থিতি বাড়লে আমরা পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়াতে পারি। অধিক সংক্রমিত সীমান্তবর্তী এলাকায় বিনামূল্যে পরীক্ষা হচ্ছে। যতক্ষণ ৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা না যাচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।’