গবেষণা বাড়ানো গেলে বঙ্গোপসাগর থেকে আরও সম্পদ অর্জন সম্ভব: পরিকল্পনামন্ত্রী

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা বাড়ানো প্রয়োজন। গবেষণা বাড়ানো গেলে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগর থেকে অনেক সম্পদ অর্জন করতে সক্ষম হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সেভ আওয়ার সি আয়োজিত ‘নীল অর্থনীতি: সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘সুন্দরবন একসময় কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো। অযন্ত ও পরিকল্পনার অভাবে এখন অনেক ছোট হয়ে গেছে। সাগর নিয়ে বেসরকারি সংগঠনগুলো এগিয়ে আসলে আমাদের সরকার সহযোগিতা করতে চায়।’

সেভ আওয়ার সি’র সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ারুল হকের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশেনোগ্রাফি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দীন মুন্না।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার দেব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশেনোগ্রাফি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কেএম আজম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিটাইম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের প্রধান কমোডর ওয়াহিদ হাসান কুতুবুদ্দিন, বাংলাদেশ বন অধিদফতরের সহকারী প্রধান বন সংরক্ষক ড. মরিয়ম আকতার, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের উপপরিচালক (অপারেশন) এম নূর-উজ জামান প্রমুখ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সেভ আওয়ার সি’র পরিচালক এসএম আতিকুর রহমান, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, নোঙর’র সভাপতি সুমন শামস প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশেনোগ্রাফি ডিপার্টমেন্টের সভাপতি ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দীন মুন্না তুলে ধরেন, বাংলাদেশের আগামীর অর্থনীতি হতে পারে সমুদ্র অর্থনীতি। কিন্তু যথাযথ উদ্যোগের সংকট, সমুদ্রের ব্যবহারবিধি না জানায় এখনও সমুদ্র আমাদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।

ব্লু ইকোনোমির নামে বর্তমানে যেসব প্রকল্প হচ্ছে অধিকাংশই সমুদ্রবিরোধী বলে উল্লেখ করে পরিবেশ ও সমুদ্রবান্ধব সিদ্ধান্তগ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয় মূল প্রবন্ধে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন বলেন, সিডর, আইলার মতো দুর্যোগ এলে আমরা সুন্দরবনকে চিনি। অন্য সময় উপকূলীয় বন ও উপকূলকেন্দ্রিক ইকোসিস্টেম ধরে রাখা দরকার। কিন্তু আমরা ওশান ইকোনোমি নিয়ে যতটা বলি, ওশান ও কোস্টাল ইকোলজি নিয়ে তেমন একটা বলি না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিটাইম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের প্রধান কমোডর ওয়াহিদ হাসান কুতুবুদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের সমুদ্র সম্পদ আহরণের বিষয়ে যেমন উদ্যোগ নেই, তেমনি আবার যেসব কাজ হচ্ছে তার কোনও সমন্বয় নেই। কোনও ডাটাবেজ না থাকায় কাজের গতিও আসছে না। এছাড়া গবেষকরা কাজ করার জন্য তেমন লজিস্টিক সাপোর্টও নেই।

সেভ আওয়ার সি’র পরিচালক মেরিন এক্সপ্লোরার এস এম আতিকুর রহমান বলেন, আমরা জানি গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়। এজন্য আমরা নিয়মিত উপরিভাগে গাছ লাগাই। কিন্তু আমরা জানি না অক্সিজেনের ৭০ শতাংশ আসে সমুদ্রের উদ্ভিদগুলো থেকে। অথচ আমরা সমুদ্রের উদ্ভিদ রক্ষা তো দূরের কথা উল্টো দূষণের মাধ্যমে নষ্ট করছি। আমরা উপরে গাছ লাগাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও সমুদ্রে নিচের উদ্ভিদ রক্ষায় তেমন কোনও উদ্যোগ নেইনি।

অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল ফাজিতাস এবং লুলু শপ।