বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের মূল হোতা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ এর নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদদে ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের ধারাবাহিকতায় ইরানেও হামলা করেছে ইসরায়েল।
পরবর্তীতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ সরাসরি ইরানে হামলায় যুক্ত হয়। অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদের দালাল ইরান সরকারের পেছনে থেকে সাম্রাজ্যবাদী চীন-রাশিয়া পরোক্ষভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে এটি আন্ত:সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে পরিণত হয়। এ যুদ্ধে শত শত সাধারণ নাগরিককে হত্যা করাসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ধ্বংসের মাধ্যমে জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয় এবং ৩য় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়।
জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শ্যামল ভৌমিকের সভাপতিত্বে এ সমাবেশ পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত।
বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি খলীলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াসিন, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এবং বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি আক্তারুজ্জামান খান।
বক্তারা বলেন, বিশ্বের ক্ষয়িষ্ণু সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভাব-বলয়-আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে ‘আমেরিকাকে আবার প্রথম করে তোলো’ স্লোগানে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, আগ্রাসন ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিপক্ষ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি চীন-রাশিয়া পুঁজি ও শক্তির অনুপাতে তার কৌশলগত তৎপরতার মাধ্যমে আন্ত:সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববাজার দখল ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বৃহৎ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি চীন মধ্য এশিয়া থেকে ইউরোপ-আফ্রিকার দেশগুলোতে বাণিজ্য বিস্তৃতির লক্ষ্যে বেল্ট এন্ড রোড (বিআরআই) ইনিশিয়েটিভ কর্মসূচি এবং মুক্তার মালা (স্ট্রিং অব পার্ল) নামে অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে।
চীনের এ পরিকল্পনা ঠেকাতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তার নৌশক্তির বৃহৎ অংশ দক্ষিণ চীন সাগরে মোতায়েনের লক্ষ্যে ‘পিভট টু এশিয়া’ কৌশল গ্রহণ করে। এ প্রেক্ষিতে ‘চীন ঘেরাও’ কৌশল বাস্তবায়নে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল অগ্রসর করছে।
নেতারা বলেন, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনীতি-রণনীতি তথা সামগ্রিক লক্ষ্যের প্রেক্ষিতে বঙ্গোপসাগরীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহের কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং আন্ত:সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের ক্ষেত্র হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলা জরুরি।
বন্দর ও করিডর প্রদানের বিরুদ্ধে জাতীয় ক্ষেত্রে আন্দোলন আরও গুরুত্বের সাথে সামনে এসেছে। কিন্তু তথাকথিত নির্বাচন, সংস্কার ও জাতীয় ঐক্যে অংশগ্রহণ করে সাম্রাজ্যবাদের পরিকল্পনা কার্যকরের আওয়াজ তোলা দেশের শ্রমিক-কৃষক-জনগণকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কিছু নয়। তাই এর বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা সময়ের দাবি।
