একাত্তরের ডিসেম্বরের শুরুতে শক্ত প্রতিরোধের মুখে পাকিস্তান বাহিনী

১৯৭১ সালের এদিন মুক্তির সংগ্রামে উত্তাল ছিল বাংলার মাটি। বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটতে থাকে। আর অবরুদ্ধ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনেক মুক্তাঞ্চল সৃষ্টির বাস্তবতা তৈরি হয়।

ডিসেম্বরের শুরুতেই মুক্তিবাহিনীর গেরিলা আক্রমণ থেকে সম্মুখযুদ্ধের গতি বাড়ে। আর অপ্রতিরোধ্য বাঙালির বিজয়ের পথে পাকিস্তানি বাহিনীর নিষ্ঠুর সব পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে থাকে। পাকিস্তানি বাহিনী পঞ্চগড়ে রিংয়ের আকারে প্রথম ও দ্বিতীয় ডিফেন্স লাইন তৈরি করেছিল। মুজিব ব্যাটারির যোদ্ধারা মিত্র বাহিনীর সহায়তায় গভীর রাতে পঞ্চগড় আক্রমণ করায় তারা পঞ্চগড় ছেড়ে চলে যায়।

ভারতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কংগ্রেসের কর্মীসভায় বলেন, সময় বদলেছে, তিন-চার হাজার মাইল দূর থেকে বর্ণের প্রাধান্য দিয়ে তাদের (পাকিস্তান) ইচ্ছামতো হুকুমনামা জানাবেন, তা মেনে নেওয়া যায় না। ভারত আর ন্যাটিভ রাজ্য নয়। আজ আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থের জন্য দেশের সর্বোচ্চ প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করব, ওই সব বৃহৎ দেশগুলোর ইচ্ছানুযায়ী নয়। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

১৯৭১ সালের এ দিনে মুক্তিযোদ্ধারা যখন রাজধানীকে দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঢাকার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন পাকিস্তান বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে চালিয়ে যাচ্ছিল নানা অপপ্রচার। আর পরাজয় নিশ্চিত জেনে এদেশকে চিরতরে দুর্বল করে দিতে পরিকল্পনা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে থাকে। যার চূড়ান্ত বাস্তবায়ন দেখা যায় ১০ ডিসেম্বর থেকে।