আব্দুল মোমেন-অ্যান্থনি ব্লিনকেন ফোনালাপ

গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ওপর জোর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ফোনালাপে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ওপরে জোর দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘‘আমাকে ওই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানালেন, গণতন্ত্রের ওপরে মার্কিন সরকার অনেক জোর দিয়েছে এবং আমি বললাম, আমরাও গণতান্ত্রিক দেশ। তিনি (ব্লিনকেন) জানালেন. ‘আমরা মানবাধিকারের ওপর জোর দিয়েছি।’ আমিও বললাম যে, আমরাও জোর দিয়েছি। সারা দুনিয়াতে আমাদের একটি নাম আছে এবং এসব বিষয়ে আমরা সোচ্চার।’’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেটি অনেকটা মার্কিন আইন প্রণেতাদের কারণে হয়েছে বলে এন্থনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন।’

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় র‌্যাব এবং র‌্যাবের বর্তমান ও সাবেক সাত জন কর্মকর্তার ওপরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরে বুধবার সন্ধ্যায় দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ফোনালাপ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক উদ্যোগ

র‌্যাব একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী এবং যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক উদ্যোগ বাংলাদেশে সুচারুভাবে সম্পন্ন করছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদ দমন, মাদক চোরাচালান, মানবপাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বললাম যে, এটি আপনার স্মরণ রাখা উচিত যে, আপনারা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, এরাই মানবাধিকার রক্ষা করে। বাংলাদেশের জনগণ নিখোঁজ হয়েছে বলে তাদের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। কিন্তু আপনার দেশে তো প্রতিবছর ছয়  লাখ লোক নিখোঁজ হয়, আর আমার এখানে কয়টা লোক নিখোঁজ হয়।’

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আপনার (ব্লিনকেন) দেশে তো প্রতিবছর হাজারখানেক লোককে পুলিশ মেরে ফেলে ইন দ্যা লাইন অব ডিউটি। আমাদের দেশে যদি মারে তাহলে বলে আইনবহির্ভূত হত্যা, কিন্তু আপনাদের দেশে মারলে সেটি হয়ে যায় লাইন অব ডিউটি।’

আব্দুল মোমেন বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে জানালেন, ‘এটি নিয়ে আমরা আলোচনা করবো এবং আলোচনার দরজা খোলা আছে’, বলে জানান আব্দুল মোমেন।

শিডিউল সমস্যা

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত উষ্ণ ছিল জানিয়ে  মোমেন বলেন, ‘আমরা শিডিউল ঠিক করতে পারছিলাম না। উনি একটি টাইম দিলেন, কিন্তু ওই সময় আমার ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ। তখন আমরা একটি সময় দিলাম। কিন্তু সেই সময় উনার আরেকটি দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছিল। পরে বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তিনি আমাকে ফোন করেন। তখন আমি রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে অংশ গ্রহণের জন্য বঙ্গভবনে ছিলাম।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অনেকক্ষণ আলোচনা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অ্যান্থনি ব্লিনকেন বলেছেন, ‘আগামী বসন্তে আপনি ওয়াশিংটনে আসবেন আশা করি এবং আমরা একাধিক আলোচনা করবো।’