ঢাকা চায় বিনিয়োগ, রিয়াদ চায় ‘এক্সপো-২০৩০’ এ সমর্থন

শ্রমিক কেন্দ্রিক সম্পর্কের বাইরে গিয়ে অংশীদারিত্ব বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব। একদিকে ঢাকা চায় বিনিয়োগ, অন্যদিকে ভূ-রাজনীতিতে দৃঢ় ও শক্তিশালী বাংলাদেশকে পাশে চায় সৌদি আরব। ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘাত বা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মতো বিষয়ে রিয়াদকে সমর্থন করে ঢাকা। সম্প্রতি সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদের ঢাকা সফরের সময়ে ২০৩০ সালে অনুষ্ঠেয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ল্ড এক্সপো নির্বাচনের জন্য সমর্থন চেয়েছে সৌদি আরব।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ২০৩০-এ ওয়ার্ল্ড এক্সপো করতে চায় সৌদি আরব এবং তারা বাংলাদেশের সমর্থন চায়।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের এটি অন্যতম কারণ জানিয়ে সচিব বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড এক্সপো’র নির্বাচন ২০২৩-এর শেষে হবে।’

আগামী মানবাধিকার কাউন্সিল ও ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (ইকাও) নির্বাচন করতে চায় বাংলাদেশ এবং এজন্য সৌদি সমর্থন চেয়েছে ঢাকা বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

ওয়ার্ল্ড এক্সপো আয়োজন করা যেকোনও দেশের জন্য অত্যন্ত সম্মানের এবং এই অনুষ্ঠান আয়োজনকারী দেশকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশ ২০৩০-এর অনুষ্ঠান আয়োজনের আগ্রহ দেখিয়েছে। আগামী বছর প্যারিসে এই নির্বাচন হবে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০-এর নির্বাচনের সময়ে আমরা যে ভুল করেছিলাম, আশা করি এবার সেটি হবে না।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ওয়ার্ল্ড এক্সপো আয়োজন করতে চেয়েছিল রাশিয়ার একাটেরিনবার্গ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। ওই নির্বাচনে প্রথম অবস্থায় রাশিয়াকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা। পরে বিভিন্ন বিবেচনায় আরব আমিরাতকে সমর্থন দেওয়া হয়। কিন্তু দুবাই এটি ভালো মতো নেয়নি এবং এজন্য ওই দেশে শ্রমিক পাঠানো অনেক দিন কঠিন ছিল।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ২০৩০ এক্সপোর জন্য যেসব দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে যোগ্য রিয়াদ এবং ধারণা করছি এক্ষেত্রে সৌদি আরবকেই ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

বিনিয়োগ

সৌদি বিনিয়োগে আগ্রহ রয়েছে বাংলাদেশের এবং অনেক প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বিনিয়োগ নিয়ে সৌদি আরবের আগ্রহ আছে। আমরা যখন বলেছি, তখনই ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে। একটি বিজনেস ফোরাম করার জন্য আলোচনাও হয়েছে।

তিনি বলেন, “আমাদের এবং সৌদি অগ্রাধিকারের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে হবে। তাদের ‘সৌদিয়াইজেশন’ যে পরিকল্পনা আছে—সেগুলোতে আমরা কীভাবে সাহায্য করতে পারি সেটি নিয়ে আরও আলোচনার সুযোগ আছে।”

তাদের গ্রিন ইনিয়েশিয়েটিভে (সবুজ উদ্যোগে) কাজ করা সম্ভব। কারণ, এ কাজে তারা কোটি কোটি গাছ লাগাবে এবং এগুলোর চারা সরবরাহ এবং পরিচর্যায় আমরা সহায়তা করতে পারি বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।