বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ

নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রস্তাবিত বাজেটে  ঘাটতি বাজেট  ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেটে ঘাটতি বাড়লেও তা জিডিপির ৫-এর ঘরেই থাকছে।  বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটে ঘাটতি জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। সে হিসাবে ঘাটতি কমানোর প্রস্তাব থাকছে নতুন বাজেটে। কিন্তু জিডিপির তুলনায় ঘাটতি কমলেও টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাড়ছে ৩০ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, বাজেটে ঘাটতি পূরণে আগামী অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। চলতি বছরে যার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরেও এ খাতে একই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।

এছাড়া বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ ও অনুদান (নিট) গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। চলতি বছর এক্ষেত্রে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে রড, সিমেন্টসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে। একইভাবে পানি সরবরাহ, পয়োনিষ্কাশন, বৈদ্যুতিক সামগ্রী, ইলেকট্রো মেকানিক্যাল পণ্যের দাম বেড়েছে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের ব্যয় বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু উন্নয়ন ব্যয় খুব বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব নেই বাজেটে। আসছে বাজেটে এডিপির আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এডিপির আকার ২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের জিডিপির আকার বাড়ানো হচ্ছে। প্রাক্কলিত আকার ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী প্রাক্কলিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

এদিকে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন খাতের মোট ভর্তুকি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৬৬ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৭ শতাংশ।