নারী-শিশুর জন্য বরাদ্দ বাড়ছে ১০০ কোটি

২০২২-২০২৩ অর্থবছরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪ হাজার ২৯০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২১-২০১২ অর্থবছরে যা ছিল ৪ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসরণে নারীর মানবিক সক্ষমতা, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও সুবিধা বৃদ্ধি, নারীর কণ্ঠস্বর ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নারীদের জন্য অবকাঠামো ও যোগাযোগ পরিষেবা বৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা জোরদার করার জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে সরকার। যেমন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন, কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্প, নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টি সেকটোরাল প্রোগ্রাম, উপজেলা পর্যায়ে নারীদের জন্য আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রকল্প, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন এবং জয়িতা টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্প উল্লেখযোগ্য।

তিনি আরও বলেন, গ্রামীণ দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের ঋণ প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য ক্ষুদ্রঋণ তহবিল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রাপ্ত বরাদ্দ দ্বারা ৬৪টি জেলার ৪৮৮টি উপজেলায় ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে।

মন্ত্রী বলেন, সরকার শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং তাদের সামগ্রিক উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্তকরণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শিশুদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ, খাদ্য ও পুষ্টির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে অভিগম্যতা নিশ্চিত করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমরা আগামী বাজেটেও গুরুত্ব দেবো।

কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যকৌশল বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় পুষ্টি সংবেদনশীল পদ্ধতি এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে শিশুসহ দরিদ্র পরিবারগুলোর অগ্রাধিকারের বিষয়টি আমরা বিবেচনায় রাখছি। ইতোপূর্বে প্রণীত 'বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭', '২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন', নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন-২০২০' এর কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

এছাড়া, নারী শ্রমিকের শিশুদের দিবাকালীন পরিচর্যা ও নিরাপত্তার নিমিত্ত “শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন, ২০২১' প্রণীত হয়েছে এবং এরই মধ্যে দেশের ৬,১৬০টি শিল্প-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে “শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।

বাজেট বক্তৃতায় জানানো হয়, নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশুকল্যাণে আগামী বাজেটে পাঁচটি ব্যয়খাতকে গুরুত্ব প্রদান করেছি। সেগুলো হচ্ছে— দুঃস্থ মায়েদের খাদ্য সহায়তা (ভিজিডি) কর্মসূচি, জীবন-চক্রভিত্তিক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড বেনিফিট প্রোগ্রাম, শিশু বিকাশ কেন্দ্র ও কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন কর্মসূচি, নারীদের জন্য কারিগরি, বৃত্তিমূলক, আয়বর্ধক ও উৎপাদনশীল প্রশিক্ষণ প্রদান এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ ও আইনগত সহায়তা প্রদান।