‘অবৈধ অভিবাসন ক্যানসারের মতো’

অবৈধ অভিবাসন একটি ক্যানসারের মতো এবং এটির সঙ্গে দেশে-বিদেশে অনেক চক্র জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘বৈধপথে অভিবাসনের সম্পূর্ণ সুফল পেতে হলে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে হবে।’

৮০ বা ৯০-এর দশকে অবৈধ পথেও অভিবাসন করে পরবর্তী সময়ে বৈধ হওয়ার একটা সুযোগ ছিল। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে এই সুযোগ অত্যন্ত সীমিত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বৈধ পথে অভিবাসন ছাড়া এখন আর তেমন কোনও সুযোগ নেই’।

ইটালির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আগে ওই দেশে সিজনাল কর্মী পাঠানো যেতো, কিন্তু এর অপব্যবহারের কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এটি ভারত বা অন্য দেশগুলোর জন্য খোলা ছিল। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় সেটি আবার চালু হয়। কিন্তু আমরা তাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের মধ্যে রয়েছি। যদি এর অপব্যবহার হয় তবে এটি বন্ধ হয়ে যাবে।

জিরো টলারেন্স

মানবপাচার প্রতিরোধ করার জন্য বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স পলিসি রয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, গ্লোবাল কম্প্যাক্ট অন মাইগ্রেশন আমরা অনুমোদন করেছি এবং আনুষঙ্গিক যেসব প্রতিশ্রুতি রয়েছে সেটি আমরা পালন করার চেষ্টা করছি।

অবৈধ অভিবাসন একটি ক্যানসারের মতো এবং এটির সঙ্গে দেশে-বিদেশে অনেক চক্র জড়িত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থা, এনজিও এবং সিভিল সোসাইটি সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে। মিডিয়াকে নিয়েও আমরা কাজ করছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে।’

কোভিড সময়

কোভিডের সময় দেখেছি নিয়মিত কর্মসংস্থান কমে যাওয়া এবং অনিশ্চয়তার কারণে সেসময় কিছু বিপথগামী তরুণ অনিশ্চিত পথে পা বাড়িয়েছিল।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘গত এক বছরে আমরা এক হাজারেরও বেশি এ ধরনের মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিকে দেশে ফিরিয়ে এনেছি আন্তর্জাতিক অভিমান অভিবাসন সংস্থার মাধ্যমে। আমরা আমাদের চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং এটি প্রতিরোধ করার জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তাসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

ট্রাফিকিং ইন পার্সন রিপোর্ট

যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্ট মঙ্গলবার ট্রাফিকিং ইন পার্সন (টিআইপি) রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্তরে র‌্যাংকিং ধরে রেখেছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘টিআইপি রিপোর্টে আমরা একসময় ওয়াচ লিস্টে ছিলাম এবং পরবর্তী সময়ে আমাদের প্রচেষ্টার স্বীকৃতি স্বরূপ আমাদের উপরের ধাপে উন্নীত করা হয়েছে এবং আমরা এখন টিয়ার টুতে রয়েছি। আমাদের এখন চেষ্টা থাকবে আমরা যেন টিয়ার ওয়ানে পৌঁছাতে পারি।’

টিয়ার ওয়ানে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনও নেতিবাচক একটি প্রবণতা রয়েছে এবং দালাল বা পাচারকারী চক্র সক্রিয়।’