দুর্ঘটনার শঙ্কায় পদ্মা সেতুতে এখনই মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘সেখানে একটা সমস্যা হয়ে গেছে। পদ্মা সেতুই চলাচলের অনুপযোগী হয়েছে বলেই উল্লেখ করেছেন অনেকে। মধুমতি সেতু উদ্বোধন হলে পদ্মা সেতুর ওপর চাপ বাড়বে। পদ্মা সেতুতে এ মুহূর্তে সোটরসাইকেল চালুর বিষয়ে ভাবছি না। পরবর্তীতে অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গত ২৬ জুন পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর পর ভারী যানবাহনের পাশাপাশি মোটরসাইকেল চলারও অনুমতি ছিল। কিন্তু বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার পর সেতুর ওপর স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এরপর সরকার ওই সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের বিরুদ্ধে অনেকে ষড়যন্ত্র করেছে। কে কোথায় ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের খুঁজে বের করার জন্য সরকার একটি কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি কোন পর্যায়ে আছে, কবে নাগাদ এ কমিশন গঠিত হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি আমি জানি না। বিষয়টি আইনমন্ত্রী বলতে পারবেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। মধুমতি সেতু উদ্বোধন হবে আগামী অক্টোবরে। মধুমতি নামে এর নামকরণ হবে। সেপ্টেম্বরে এর কাজ শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া সময় অনুযায়ী এটি উদ্বোধন করা হবে।
মেট্রোরেলের ভাড়ার বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কারও কারও ভিন্ন মত থাকতে পারে। বাস্তবে যখন তারা আসা-যাওয়া করবেন, ৪০ মিনিটে গন্তব্যে আসবেন তখন সহজভাবে নেবেন বলে আশা করছি।’
বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল নিয়ে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে মেট্রোরেলের ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ চলতি বছরের ডিসেম্বরে চালু হবে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বাকি অংশ চালু হবে আগামী বছরের ডিসেম্বরের আগেই।
মন্ত্রী জানান, কর্ণফূলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের দুটি টিউবের একটি টিউব চলতি বছরের অক্টোবরে খুলে দেওয়া হবে। বাকিটা আগামী ডিসেম্বর। এ মুহূর্তে সারা দেশে ছোট-বড় ৮৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গায় ছয় লেনের সড়কের কাজ শেষ। এ বছরই এ সড়কের উদ্বোধন করা হবে।
রোড সেফটি বা সড়ক নিরাপত্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে অনা খুবই জরুরি মনে করে তিনি বলেন, আগে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দিনে দু-চারটি দুর্ঘটনা ঘটত। আমরা সেই সড়ক প্রায় দুর্ঘটনামুক্ত করেছি। কোথাও রাস্তা সম্প্রসারণ করেছি। কোথাও কোথাও বাঁক সোজা করে নির্মাণ করেছি। এভাবে সেখানে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা হয়েছে।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, ১২ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্সের মধ্যে সাড়ে ১১ লাখ লাইসেন্স ডিজিটাল করে ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তিন চাকার বাহন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কোনোভাবেই এগুলোকে শৃঙ্খলায় আনা যাচ্ছে না। সুযোগ পেলে এরা হাইওয়েতে উঠে পড়ে। একটি ইজিবাইকে আটজন যাত্রী উঠলে যখন এটি দুর্ঘটনায় পড়ে, তখন আটজনই মারা যায়। এ কাররেণ দুর্ঘটনার সংখ্যা কমলেও মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে নতুন উদ্ভব হয়েছে মোটরসাইকেল। রাজধানীতে শৃঙ্খলা আনতে পারলেও মফস্বলে এটি পারা যায়নি।