স্পিকার শিরীন শারমিনের সঙ্গে আসামের স্পিকারের সাক্ষাৎ

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে আসাম আইনসভার স্পিকার শ্রী বিশ্বজিৎ দাইমারির নেতৃত্বে সংসদীয় প্রতিনিধিদল রবিবার (২০ নভেম্বর) সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশ-ভারত সুদীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিনিয়োগ, দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

রবিবার জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক (গণসংযোগ) মো. তারিক মাহমুদের সই করা পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্য মো. শামসুল হক টুকু, চিফ হুইপ ও সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী, হুইপ ও সংসদ সদস্য আতিউর রহমান আতিক, হুইপ ও সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম ও সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন সরকারপ্রধান শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও আদর্শিক নেতৃত্বই দুদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ভীত স্থাপন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ সম্পর্ক আরও প্রতিষ্ঠিত ও সুসংহত হয়। মুজিব শতবর্ষের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর দুদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে জোরদার করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি, ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানা চুক্তি ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক কীভাবে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে সুসংহত করা যায়, সে বিষয়ে দুদেশকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান স্পিকার।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক সংকটময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারত শুধু ভৌগোলিক সীমান্তেই আবদ্ধ নয়, ৫০ বছর ধরে দুই দেশের শিল্প, সাহিত্য, যোগাযোগব্যবস্থাসহ নানা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা লক্ষণীয়। ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো বন্ধু। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর পাকিস্তানের বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি, প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় ও সার্বিক সহযোগিতা দেয় ভারত।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে নিরলস কাজ করছেন। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বঙ্গবন্ধু টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ইত্যাদি নির্মাণ কাজ চলমান। কোভিডের বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও সরকারের যুগোপযোগী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশে খাদ্য সংকট হয়নি বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ও ভারতের সুদীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে আসাম বিধানসভার স্পিকার শ্রী বিশ্বজিৎ দাইমারি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মূর্ত প্রতীক। বাংলাদেশের চলমান অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়ন সত্যি অনুসরণীয়। বাংলাদেশের সংসদে উল্লেখযোগ্য নারী সংসদ সদস্যের অংশগ্রহণ প্রশংসনীয়।

বাংলাদেশ ভ্রমণের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে সংসদীয় প্রতিনিধিদলের জন্য সহায়ক বলে উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী বিশ্বজিৎ দাইমারি বাংলাদেশের স্পিকারকে আসাম বিধানসভা পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানালে ড. শিরীন শারমিন তা সাদরে গ্রহণ করে ভবিষ্যতে সুবিধাজনক সময়ে পরিদর্শনের কথা জানান।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ভারতকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উভয় দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

এর আগে আসাম আইনসভার স্পিকার শ্রী বিশ্বজিৎ দাইমারির নেতৃত্বে সংসদীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ পরিদর্শন করেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধিদল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

এ সময় দুদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।