ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপব্যবহার রোধে সরকার সচেষ্ট

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘ইন্টারনেটে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়ানো গুজব ও ঘৃণা থেকে আমরা মুক্ত নই। এসব প্রতিরোধে সরকার কয়েক বছর আগেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করেছিল, তবে এই আইনের কিছু অপব্যবহারও হয়েছে। সরকার আইনটির অপব্যবহার রোধে সচেষ্ট, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যাতে এই আইনের সঠিক ব্যবহার হয়।'

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে 'ঘৃণা ও গুজব প্রতিরোধে ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধির গুরুত্ব' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। কানাডিয়ান হাইকমিশনের সহায়তায় গোলটেবিল বৈঠকটির আয়োজন করে ওমেন জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (ডব্লিউজেএনবি)।

শাহরিয়ার আলম বলেন, 'সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করছে, বিশ বছর আগে এটা কেউ বিশ্বাস করতে চাইতো না। সামাজিক মাধ্যমে গুজব ও ঘৃণা প্রতিরোধের আইন নিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। অনেক সময়ই গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীরা এ আইনের অপব্যবহারের শিকার হয়েছেন।'

সামাজিক মাধ্যমে গুজব ও ঘৃণা ছড়ানোর বিষয়টি বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'শুধু রাজশাহী-চট্টগ্রাম নয় নিউইয়র্ক-লন্ডনেও নারীরা সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ করছেন। ফলে গুজব-ঘৃণা প্রতিরোধে বিশ্বের প্রতিটি শহরেই আলোচনা হওয়া উচিত। এটি মোকাবিলায় আমাদের বৃহৎ বৈশ্বিক সহায়তা দরকার।'

তিনি আরও বলেন, 'সংবাদ প্রকাশের আগে তা যাচাইয়ে গণমাধ্যমের কর্তাব্যক্তিদেরও সচেতন হতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়া কোনও ঘটনা থেকে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্বশীল হতে হবে। গুজব নির্মূলের জন্য তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।'

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস বলেন, 'বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য সাইবার বুলিং একটি সমস্যা। বাংলাদেশের মতো কানাডায়ও মহিলা রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা অনলাইনে ঘৃণার সম্মুখীন হয়েছেন। সুতরাং বৈশ্বিকভাবেই এটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা কানাডা-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছি। কানাডায় আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র‍্যাটেজি চালু করেছি। এটি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর বাক-স্বাধীনতা বিকাশে ভূমিকা রাখবে।'

সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুলের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা।