আয় কমেছে বিআইডব্লিউটিসির, নেওয়া হচ্ছে বিকল্প উদ্যোগ

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আয় ২৭ ভাগ কমে গেছে। পদ্মা সেতু চালুর পর এই পরিবর্তন এসেছে। আয় বাড়াতে ক্রুজ সার্ভিস চালুসহ নতুন কিছু উদ্যোগ নিয়েছে করপোরেশন। বিআইডব্লিউটিসি’র পক্ষ থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, কমিটির আগের বৈঠকে বিআইডব্লিউটিসি’র কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান পদ্মা সেতু চালুর ফলে করপোরেশনের আয় ২৭ ভাগ কমে গেছে উল্লেখ করে আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দেন। তিনি জানান, বেশ কয়েকটি নতুন রুটে ফেরি চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান আছে। মাওয়া ফেরিঘাটকে পর্যটনবান্ধব করার ব্যাপারে পর্যটন করপোরেশনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এছাড়াও করপোরেশনের প্যাডেল স্টিমারগুলো দিয়ে ঢাকায় ক্রুজ সার্ভিস চালুর ব্যাপারে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।

করপোরেশনের আয় বাড়াতে কলকাতার সঙ্গে কন্টেইনার সার্ভিস চালুর প্রস্তাবের কথাও জানান বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান। এই সার্ভিস চালু করা সম্ভব হলে প্রতিদিন ১০ হাজার ডলার আয় করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।

এ বছরের ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হয়। এই সেতু চালু হওয়ার ফলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। সেতু চালু হওয়ায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটের ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যান চলাচল উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। এর ফলে বিআইডব্লিউটিসি'র আয়ে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

এ বিষয়ে গত আগস্ট মাসে সংসদের প্রশ্নোত্তরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতু চালুর ফলে বিআইডব্লিউটিসির রকেট/স্টিমারের যাত্রী সংখ্যা অতিমাত্রায় কমে গেছে। এছাড়া মাওয়া-মাঝিকান্দি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। দৌলতদিয়া ফেরি রুটেও যানবাহন চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এতে সংস্থার রাজস্বও কমেছে।

এদিকে সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে, বিআইডব্লিউটিএ'র নিয়ন্ত্রণাধীন নির্মিত এবং নির্মিতব্য ওয়াকওয়ে, ইকোপার্ক, ট্যুরিজম স্পট, ক্যান্টিন ইত্যাদি ইজারার মাধ্যমে রাজস্ব আদায় ও পরিচালনার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য কমিটি গঠনের মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কমিটি এর আগের বৈঠকে এ বিষয়ে সুপারিশ করেছিল।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে নদী তীরবর্তী জায়গা কেনাবেচার ক্ষেত্রে এনওসি প্রদানের সুপারিশ করা হয়।

নদীর তীর রক্ষার্থে বেদখল জায়গা উদ্ধার করে বনায়নে কোন ধরনের গাছ লাগানো হবে এ ব্যাপারে বন বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, রনজিত কুমার রায়, মাহফুজুর রহমান, এম আব্দুল লতিফ এবং এস এম শাহজাদা অংশগ্রহণ করেন।