সরকারের চেয়ে কম টাকায় হজ প্যাকেজ ঘোষণা হাবের

সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০ হাজার টাকা কমিয়ে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়  সর্বনিম্ন ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকায় হজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে। এবছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা।

সরকারি-বেসরকারি উভয় প্যাকেজেই গত বছরের চেয়ে খরচ বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। ২০২২ সালে হজের জন্য সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হোটেল ভিক্টোরিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব ফারুক আহমদ সরকার, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াকুব শরাফতীসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হাব সভাপতি বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য একটি প্যাকেজ করা হয়েছে। এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। তবে হজ এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন প্যাকেজ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, সরকারের চেয়ে ১০ হাজার টাকা কমে প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও হাজিরা বেশি সুবিধা পাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। হাবের ঘোষিত প্যাকেজের হজযাত্রীদের পবিত্র হারাম শরিফের বাইরের চত্বরের সীমানার সর্বোচ্চ এক হাজার ৫০০ মিটার দূরত্বে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি ব্যবস্থায় ২০০০ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে আবাসন রয়েছে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি হজ পালন করবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ১ লাখ ১২ হাজার ১৬৮ জন।

হাব সভাপতি বলেন, এবার বিমান ভাড়া বৃদ্ধি ও মুদ্রার কনভারশন রেট বেড়ে যাওয়ায় এবার হজের প্যাকেজ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে যেসব হজ যাত্রী ৩০ হাজার টাকা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন তারা ভেবেছেন ৪ লাখ কিংবা সাড়ে ৪ লাখ টাকায় হজে যেতে পারবেন। আমরা বিমান ভাড়া যৌক্তিক করার দাবি জানাচ্ছি।

হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, এবার সবাই হজে যেতে পারবেন। ৬৫ বা এর বেশি বয়সীরা হজে যেতে পারবেন।  ২১ মে থেকে হজে গমনেচ্ছুদের জন্য ফ্লাইট শুরু হবে। যারা প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন তারা আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে বেসরকারি হজযাত্রীদের নিবন্ধন করতে হবে।

হজে গমনেচ্ছুদের সর্তক করে শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, হজযাত্রীদের হজ প্যাকেজের পুরো অর্থ শুধু সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির ব্যাংক একাউন্ট বা সরাসরি এজেন্সিতে জমা দিয়ে মানি রিসিট সংরক্ষণ করবেন। কোনোক্রমেই মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের কাছে কোনও প্রকার লেনদেন করবেন না। হজযাত্রীরা হজ প্যাকেজের পুরো অর্থ আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে অবশ্যই নিজ নিজ এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে জমা করে বা এজেন্সির অফিসে জমা দিয়ে মানি রিসিট গ্রহণ করবেন।

হাব সভাপতি বলেন, হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে। পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করার সময় হজযাত্রীকে প্রাক-নিবন্ধনে ব্যবহৃত জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা জন্ম নিবন্ধনের নম্বর হুবহু লিপিবদ্ধ করতে হবে। সৌদি ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার জন্য পূর্ণাঙ্গ নামে পাসপোর্ট করতে হবে। পাসপোর্টের তথ্যপাতা স্ট্যাপলার পিন দিয়ে গাঁথা যাবে না বা অন্য কোনোভাবে ছিদ্র করা যাবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মেনিনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিষেধক টিকার সনদ লাগবে।

হজ ফ্লাইট প্রসঙ্গে হাব সভাপতি বলেন, কোনও এয়ারলাইন এ বছর ডেডিকেটেড ফ্লাইট ছাড়া শিডিউল ফ্লাইটে কোনও হজযাত্রী বহন করতে পারবে না। প্যাকেজ ঘোষণার পর সৌদি সরকার অতিরিক্ত কোনও ফি আরোপ করলে তা প্যাকেজের মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং হজযাত্রীকে পরিশোধ করতে হবে।

এদিকে ১ ফেব্রুয়ারি সরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। প্রতিমন্ত্রী জানান, মিনার তাঁবুর সি ক্যাটাগরির মূল্য অনুসারে সরকারি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে।  তাঁবুর অবস্থান ছাড়া অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজের মতো নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।