চাঁদপুর শহরে আবারও কিশোর গ্যাং অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে হামলা চালিয়েছে। পৃথক ঘটনায় দুই কিশোরকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয় এবং দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। গত কয়েকদিন কিশোর গ্যাংয়ের অস্ত্রের মহড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শহরের বাসিন্দারা।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া, থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ সদস্যরা শহরে অভিযান চালান। এ সময় আট জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শহরের কালিবাড়ী, কোর্ট স্টেশন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড, রেললাইন, মিশন রোড, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বড় স্টেশন ও প্রেসক্লাব সড়কে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সন্দেহভাজন কিশোর ও যুবকদের তল্লাশি করে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে ওসি বাহার মিয়া হাসান আলী স্কুল মাঠ এলাকায় থেকে ইয়াবাসহ বাবুরহাট এলাকার শুকুর শেখের ছেলে শামীম শেখ ওরফে মান্না ও মনির মিজির ছেলে তাসফির মিজিকে আটক করেন। চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, শহরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এটি পুলিশের নিয়মিত অভিযান। আটক কিশোরদের বিষয়ে যাচাই বাছাই শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাদের অভিভাবকদের ডাকা হবে।
তিনি আরও বলেন, অভিযানকালে আমরা রেললাইন এলাকায় সন্ধ্যার পর কিশোর বয়সীরা যাতে আড্ডা না দিতে পারে, সে বিষয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করেছি। সেই সঙ্গে শহরের অটোরিকশা স্ট্যান্ডের ব্যবসায়ীদের কিশোর গ্যাং বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্যও বলা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসির আরাফাত বলেন, শহরে কিশোর গ্যাং দমাতে পুলিশ ও ডিবি যৌথ অভিযান চালিয়েছে। এ সময় সন্দেহভাজন কয়েকজন কিশোরকে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি মাদকসহ দুজনকে ধরতে সক্ষম হয় পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হবে।
এর আগে, রবিবার সন্ধ্যায় শহরের ছায়াবানী এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক পক্ষের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয় ঢালীর ঘাট এলাকার স্কুলছাত্র রাশেদ (১৫)। পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে ধাওয়া করে সড়কে ফেলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। পরে তাকে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তারও আগে, শনিবার রাতে শহরের পুরাণ বাজার জাফরাবাদ এলাকায় ওয়াজ শুনতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হয় আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সিফাত পাটোয়ারী। তাকেও চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গত ৫ আগস্টের পর শহরে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় রাজনৈতিক ফোরাম, জেলা প্রশাসন, ব্যবসায়ী সংগঠন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক মতবিনিময় হয়। এসব ফোরামে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।