শ্রম খাত সংস্কারে যেসব অগ্রগতি

অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত শ্রম খাতে যেসব সংস্কার কার্যক্রম শেষ করেছে, তার একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন বুধবার (২৫ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে শ্রম অধিকার, আইন সংশোধন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন অনুমোদনসহ একাধিক উদ্যোগ রয়েছে; যা গত ১৫ জুনের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে বা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জাতীয় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শদাতা পরিষদ পুনর্গঠন

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সরকার জাতীয় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শদাতা পরিষদ  (টিসিসি) পুনর্গঠন করে। এর লক্ষ্য ছিল সংস্থাটিকে আরও কার্যকরী করা এবং শ্রমিক ও নিয়োগকর্তাদের প্রতিনিধিত্ব আরও শক্তিশালী করা। সংস্কার করা টিসিসি ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত তিনবার বৈঠক করেছে এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এই পরিবর্তনকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।

নতুন আইএলও কনভেনশন অনুমোদনের প্রক্রিয়া

সরকার চলতি বছর সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আইএলও কনভেনশন অনুমোদনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেগুলো হলো—কনভেনশন ১৫৫: পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য; কনভেনশন ১৮৭: নিরাপত্তার জন্য প্রচার কাঠামো এবং  কনভেনশন ১৯০: কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ।

কনভেনশন ১৫৫ ও ১৮৭ বর্তমানে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী এগিয়ে চলেছে এবং এগুলোর ব্যাপারে কোনও বড় ধরনের বিরোধ দেখা যায়নি। তবে, কনভেনশন ১৯০ নিয়োগকর্তা পক্ষের বিরোধিতার মুখে পড়েছে, যার ফলে অনুমোদনের প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল হয়ে ওঠেছে। তবুও সরকার এর বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন (বিএলএ) সংশোধন

২০২৪ সালের শেষের দিকে সরকার আইএলও ও প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরামর্শের ভিত্তিতে নতুন খসড়া শ্রম আইন প্রস্তুত করে। এই আইনটি ২০২৫ সালের জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে। সংশোধিত আইনটি শ্রমিক সুরক্ষা ও অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে বলে সরকার আশা করছে।

ইপিজেড আইন সংশোধনের পরিকল্পনা

রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) আলাদা শ্রম বিধির আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছে; যা তাদের জাতীয় শ্রম আইন থেকে কিছুটা ছাড় দিয়েছে। সরকার পরিকল্পনা করেছে, দুই ধাপে এই আইন সংশোধন করা হবে। প্রথম ধাপে ২০২৫ সালের জুলাইয়ে সংশোধিত বিএলএ কার্যকর হবে এবং দ্বিতীয় ধাপে ইপিজেড আইনকে সংশোধিত বিএলএ’র মূল সুরক্ষা বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হবে।