শুরুতেই অবজেক্টিভ, ভোগান্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা

এবার শুরুতেই অবজেক্টিভ প্রশ্নপত্র হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরানকল, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও কিছু ব্যক্তির অসাধু কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই পেতে এবার নতুন নিয়মে রবিবার শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বহুনির্বাচনি বা অবজেক্টিভ পরীক্ষা শুরুতেই নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ পদ্ধতিতে এবারই প্রথম পরীক্ষা হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হয়েছে পরীক্ষার্থীরা। সব প্রশ্নের উত্তর না দিতেই পরীক্ষার সময় শেষ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ অনেক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
পূর্ব নির্ধারিত রুটিন অনুযায়ী এবার প্রথমবারের মতো বহুনির্বাচনি অংশের পরীক্ষা আগে শুরু হয়। এতে সময় দেওয়া হয় ৫০ মিনিট। ১০ মিনিট বিরতি দিয়ে পরের দুই ঘণ্টায় নেওয়া হয় সৃজনশীল অংশের পরীক্ষা।
বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা শেষে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকের। ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী লামিসা পরীক্ষা দিয়ে বের হচ্ছিলেন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ থেকে। বহুনির্বাচনি পরীক্ষা প্রথমে নেওয়ায় কোনও সমস্যা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, অবশ্যই সমস্যা হয়েছে। আমরা তো আগে থেকে এভাবে পরীক্ষা দিতে অভ্যস্ত নই। ফলে টাইম মেইনটেইন করতে সমস্যা হয়েছে।
আরেক পরীক্ষার্থী আশা বলেন, আগে যখন আমরা সৃজনশীল সাবজেক্টিভ অংশের পরীক্ষা প্রথমেই দিয়েছি তখন পরীক্ষা দিতে দিতেই অনেক কিছু সহজে মনে পড়ে যেতো। পরে অবজেক্টিভের ক্ষেত্রে সেটা কাজে লাগাতে পারতাম। কিন্তু এখন আর সেটা হচ্ছে না। অবজেক্টিভ আগে দেওয়ার কারণে অনেক কিছুই মনে পড়েনি। বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর ভুলও করেছি হয়তো।

ফাহিমা নামে এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র যেন সুবিধা না করতে তার জন্য এই পদ্ধতিটি ভালো কিন্তু সমস্যাও হয়েছে। আমার মেয়ে পরীক্ষা দিয়ে বের হয়েই বলছে- অবজেক্টিভ পরীক্ষা ভালো হয়নি। কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর ঠিকমতো দিতে পারেনি। হঠাৎ পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হয়েছে।

মিম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষার রুটিন ও পরীক্ষা পদ্ধতি জানার পরে কলেজের শিক্ষকরা আমাদের এ পদ্ধতিতে কিছুদিন পরীক্ষা নিয়েছেন। তবে গত দুই বছর ধরে যেভাবে পরীক্ষা দিচ্ছি তাতে মাত্র কয়েকদিনে কিছুই প্র্যাকটিস হয়নি। হঠাৎ এভাবে পরীক্ষা নেওয়ায় বেশ ঝামেলাতেই পড়েছি। পরীক্ষার শুরু থেকেই মানসিকভাবে চাপের মধ্যে ছিলাম, ফলে প্রশ্নের উত্তর মনে করতে সময় লেগেছে।

তবে এবারের এসএসসি পরীক্ষাতেও অবজেক্টিভ পরীক্ষা শুরুতে নেওয়া হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় এবার এইচএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই নিয়মে পরীক্ষা নেওয়া হলো। তবে পরীক্ষার্থীদের দাবি- আগে রচনামূলক পরীক্ষাই তাদের জন্য সুবিধাজনক। প্রশ্নপত্র ফাঁস অন্যভাবেও ঠেকাতে পারে সরকার বা কর্তৃপক্ষ। আর প্রশ্ন যারা ফাঁস করবে তাদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, এ বছর দেশের আটটি সাধারণ, মাদ্রাসা, কারিগরিসহ ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট পরীক্ষার্থী ১২ লাখ ১৮ হাজার ৬২৮ জন। যা গত বছরের চেয়ে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৪৪ জন বেশি। সময়সূচি অনুযায়ী তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ৯ জুন। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ জুন শুরু হয়ে ২০ জুন শেষ হবে।

/আরএআর/এমও/এএইচ/