নকল করতে চপ্পল কাণ্ড, অতঃপর ধরা

সরকারি স্কুলের চাকরি মানেই সোনার হরিণ। কথাটা ভারতের জন্যও প্রযোজ্য। দেশটিতে সম্প্রতি ৩১ হাজার শিক্ষক পদের বিপরীতে পরীক্ষা দিয়েছে লাখ লাখ প্রার্থী। পরীক্ষায় নম্বর তুলতে কেউ কেউ এতই মরিয়া ছিলেন যে, ছয় লাখ রুপি খরচ করে একজোড়া চপ্পলও কিনেছেন তারা!

যেনতেন চপ্পল ছিল না ওটা। ছিল কাস্টমাইজড ব্লু টুথ চপ্পল। স্যান্ডেলের ভেতর পুরো একটা সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে স্রেফ নকলবাজদের কথা ভেবেই। সেইসঙ্গে পরীক্ষার্থীর কানের গভীরে গুঁজে দেওয়া হয়েছে অতিক্ষুদ্র ইয়ারবাগ। যাতে ভেতরে-বাইরে কথা চালাচালি করা যাবে একেবারে নিখুঁতভাবে। বাইরে থেকে দেখা যাবে না কিছুই।

কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি এমন ব্লুটুথ চপ্পলওয়ালাদের। রাজস্থানের একটি কেন্দ্রে তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচজনকে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা প্রীতি চন্দ্র বললেন, ‘নকল হবে এমন আশঙ্কা করছিলাম আমরা। ভেবেছিলাম প্রশ্ন ফাঁস বা কেউ কোনওভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করবে। কিন্তু এই চপ্পল একেবারে নতুন তরিকা।’

এক জোড়া চপ্পল বিক্রি হয়েছে ৬ লাখ রুপিতে

তো এত ‘নিরাপদ’ প্রযুক্তি ধরা পড়লো কী করে? পুলিশ জানালো, ঢোকার মুখে তল্লাশিতেই ধরা পড়েছে। মূলত যারা এ চপ্পল পরেছিল তারা নিজেরাই বেশ উসখুস করছিল। আর তা দেখেই সন্দেহ হয়। তাদের আলাদা করে তল্লাশি করতেই ধরা পড়ে চপ্পলকাণ্ড।

পুলিশ এখন আরও চপ্পল নির্মাতা চক্রের সন্ধানে আছে। ধরা পড়া ব্যক্তিরা জানালেন, ফোনের সুবিধাসহ এমন এক জোড়া ব্লু টুথ চপ্পল তৈরিতে খরচ পড়ে ৩০ হাজার রুপির মতো। সেটাই বিক্রি হয় ৬ লাখে।

একবার সরকারি শিক্ষক হতে পারলে জীবনে আর আর-রোজগার নিয়ে দ্বিতীয় কিছু ভাবতে হবে না, এমন ভাবনা থেকেই এত মোটা অঙ্কের টাকা চপ্পলওয়ালার হাতে তুলে দিতে বাধেনি নকলবাজদের।