বাবা হলে কী না সম্ভব!

দুই বছরের সন্তান বিরল রোগ মেনকেস সিনড্রোমে আক্রান্ত। এই জিনেটিক ডিজঅর্ডার হলে শরীরে কপার খনিজটি ঠিকমতো শোষিত হয় না। যার কারণে শিশুর কথা বলা ও কিছু অঙ্গ বিকশিত হতে পারে না। এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় কপার হিস্টাইডিন। ডাক্তাররাও বলে দিয়েছেন এ ধরনের রোগে আক্রান্তরা বড়জোর তিন-চার বছর বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ বাবা জু ওয়েই। এক দিকে চীনে তিনি ওষুধটা পাচ্ছেন না, আরেক দিকে আমদানিও করতে পারছেন না কড়াকড়ির কারণে। শেষে ঠিক করলেন, নিজেই বানাবেন ওষুধটা।

জেদ চেপে বসে জু ওয়েইর। ওষুধ যে বানাবেন, পড়াশোনাই তো নেই! বই কিনে ছয় মাসের মধ্যে আয়ত্ত্ব করলেন রসায়ন বিদ্যা ও ফার্মাকোলজি। সাহায্য নিলেন ইন্টারনেট ও অন্য ফার্মাসিস্টদেরও। পড়ে ফেললেন একগাদা গবেষণাপত্র। এরপর নিজের ঘরেই বানিয়ে ফেললেন আস্ত এক ল্যাবরেটরি। জানতে পারেন কপার ক্লোরাইড ডিহাইড্রেট, এ-হিস্টাইডিন ও সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের সঙ্গে পানির বিক্রিয়ার ব্যাপার রয়েছে এ ওষুধ তৈরিতে। সব মিলিয়ে খরচ করেছেন লাখ তিনেক টাকা। এরপর বানিয়েও ফেললেন। কিন্তু সন্তানের শরীরে প্রয়োগের আগে নিশ্চিত হতে হবে জু ওয়েইকে। তাই নিজের শরীরেই করলেন পরীক্ষা, খরগোশের শরীরেও প্রয়োগ করলেন কপার হিস্টাইডিন। সব ঠিকঠাক মনে হওয়ার পর সন্তানের শরীরে প্রয়োগ করলেন সেটা।

চীনের আইন অনুযায়ী জু ওয়েই কেবল তার সন্তানের জন্যই এ ‍ওষুধ বানাতে পারবেন। এর বাইরে আর কারও জন্য কোনও ওষুধ বানানোর অনুমতি তার নেই। তথাপি খবরটা ভাইরাল হওয়ার পর থেকে অনেকেই এখন জু’র কাছে ধরনা দিচ্ছেন ‘ওষুধ’ বানিয়ে দেওয়ার আবদার নিয়ে। জু অবশ্য তাদের বিনীতস্বরে ‘না’ করে দিচ্ছেন। এ দিকে জু আবার ইতোমধ্যে মেনকেস সিনড্রোমে ব্যবহৃত ‘এলেসক্লোমোল’ নামের আরেকটি ওষুধ তৈরির গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

সূত্র: ইয়াহু নিউজ