‘পাঠ্যবই নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টিকারীদের প্রতিহত করা হবে’

আল্লামা শফী আহমদস্কুলের পাঠ্যবইয়ে সামান্য ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে যারা বির্তক তুলতে চাইছেন, তাদের ডাকে দেশের একশ মানুষও সাড়া দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির  শাহ আহমদ শফী। তিনি আরও বলেন, ‘এরা সমাজ ও জনবিচ্ছিন্ন। এদেরকে কঠোরভাবে প্রতিহত করতে হবে।’ শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতিতে হেফাজত আমির এ মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে শাহ আহমদ শফী বলেন,‘দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও প্রতিবাদের পর সরকারের নীতি নির্ধারকরা বিষয়টির গুরুত্ব ও নাজুকতা উপলব্ধি করতে পেরে সিলেবাসে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন।সরকার যদি ইতিবাচক পরিবর্তন করে, তবে সেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।এখানে হেফাজতের একার খুশি বা অখুশি হওয়ার প্রশ্ন নয়।কিন্তু পাঠ্যপুস্তকে হেফাজতের দাবি শতভাগ পূরণ করা হয়েছে বলে যারা বিতর্ক তুলতে চাচ্ছেন,তারাই মুসলমানদের ঈমানি চেতনাবোধ মুছে ফেলে বাংলাদেশে ইসলাম বিদ্বেষ ও নাস্তিকতা ছড়িয়ে দেওয়ার এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছেন। পাঠ্যবইয়ে কী কী পরিবর্তন হয়েছে, সেটা ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে যাচাই করে দেখা হোক। ইতিবাচক পরিবর্তন হলেতো ভালো কথা। ভুল কিছু থেকে গেলে সেটা নিয়েওতো আলোচনা হতে হবে।’

আহমদ শফী বলেন, ‘হেফাজতের কোটি কোটি কর্মী-সমর্থক বাংলাদেশে উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। এটা বাংলাদেশ- মিয়ানমার নয়, অং সান সু চির মতো মুসলমানদের ও আলেমদের বিরুদ্ধে যা খুশি বলে পার পেয়ে যাওয়া যাবে না। প্রয়োজনে ইসলামবিদ্বেষী ভোগবাদী এই নাস্তিক্যবাদী চক্রকে উৎখাত করতে আওয়াজ তুলতে হবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘২০১৩ সাল থেকে স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে এক ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন হয়ে গেছে। সেখানে দেখা গেছে, যুগ যুগ ধরে বিদ্যমান থাকা দেশীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, এমন জনপ্রিয় গল্প ও কবিতাগুলো বাদ দিয়ে সেখানে হিন্দুত্ব ও নাস্তিক্যবাদী ধ্যানধারণার গল্প ও কবিতা সংযোজন করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে আইনসম্মতভাবেই সরকার প্রধান হিসেবে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছি। ২০১২ সাল থেকে ২০১৩ সালের বইগুলোতে কী কী মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে, তার তুলনামূলক একটা তালিকাও আমরা তুলে ধরেছি। তালিকায় দেখানো হয়েছে যে, ২০১২ সাল পর্যন্ত চলে আসা সিলেবাস পরিবর্তন করে ২০১৩ সাল থেকে স্কুল পাঠ্যবইয়ে এমন ১৭টি রচনা বাদ দেওয়া হয়েছে, যেগুলো নৈতিকতা ও আদর্শিকভাবে স্বীকৃত হয়ে আসছে কয়েক যুগ ধরে। তার পরিবর্তে এমন ১২টি নতুন রচনা সংযোজন করা হয়েছে,যেগুলো সরাসরি হিন্দুত্ব ও নাস্তিক্যবাদী ধ্যানধারণার সঙ্গে যুক্ত।’

বিবৃতিতে হেফাজত আমির বলেন,‘স্কুল পাঠ্যপুস্তকে হেফাজতের দাবি শতভাগ পুরণ হয়েছে বলে যারা বিতর্ক তুলতে চাচ্ছেন,এরা সমাজ বিচ্ছিন্ন অতিক্ষুদ্র একটা অংশ।এরা শুধু দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার ক্ষতি করছেন। এরা ‘ও’ দিয়ে ‘ওড়না’ লেখায় সাম্প্রাদয়িকতা ও অসামঞ্জস্য খুঁজে পান, কিন্তু ‘র’ দিয়ে ‘রথ টানি’, ‘ত’ দিয়ে ‘তবলা বাজাই’, ‘ঢ’ দিয়ে ‘ঢাক বাজাই’, ‘ঋ’ দিয়ে ‘ঋষি’র মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা ও অসামঞ্জস্য খুঁজে পান না।

সিএ/এপিএইচ/

আরও পড়ুন: আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে বিকল্প রাস্তা ও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা