দুর্যোগে নিরাপদ আশ্রয় হতে পারে উন্মুক্ত স্থান: আনিসুল হক

আনিসুল হকভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। তিনি বলেন, প্রতিটি এলাকায় উন্মুক্ত স্থান বা পাবলিক প্লেস থাকলে দুর্যোগকালে এগুলো নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
মেয়র আরও বলেন, ‘আশপাশের দেশগুলোতে বড় ভূমিকম্প হচ্ছে। রিখটার স্কেলে ৭, ৭.৫ কিংবা ৮ মাত্রার ভূমিকম্প এখন আর কল্পনা নয়, বাস্তব। ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকায় ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৬৬টি ভবন ধ্বংস হয়ে যাবে। ৭৫ হাজার ভবন পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৯৬ হাজার ভবন নিশ্চিহ্নের পাশাপাশি প্রায় দেড় লাখ মানুষ মারা যাবে।’
মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘এ ধরনের দুর্যোগের জন্য আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। স্কুল, কলেজের পাশাপাশি প্রতিটি এলাকার বাসিন্দাদেরও দুর্যোগ সম্পর্কে জানতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।’
রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা বারিধারার একটি হোটেলে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ‘আরবান ডিজাস্টার রেসিলেন্স ইনডেক্স’ (ইউডিআরআই) শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে আনিসুল হক এসব কথা বলেন।
‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ফর কমিউনিটি বেইজড ডিআরআর ইন আরবান এরিয়াস অব বাংলাদেশ’ কর্মসূচির আওতায় ইউডিআরআই নামের প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এটি তৈরির কাজ করেছে জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়। রিপোর্টে ডিএনসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা পরিস্থিতি নিরূপণ করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইউডিআরআই-এর সর্বোচ্চ মান ৫, তবে এর মান ৪ থেকে বেশি হলে তা উচ্চমানসম্পন্ন বলে বিবেচিত হয়। ২০১৬ সালে ডিএনসিসি এলাকার ইউডিআরআই-এর গড় মান ছিল ২ দশমিক ৫২। ২০১০ সালে এই মান ছিল ২ দশমিক ৩৫। অবকাঠামোগত (মান ৩ দশমিক ৩৭) ও সামাজিক (মান ২ দশমিক ৫৩) সক্ষমতা বৃদ্ধির সামর্থ্য ডিএনসিসির রয়েছে। অর্থনৈতিক (মান ২ দশমিক ২৩) ও প্রাকৃতিক (মান ২ দশমিক ৩৭) সক্ষমতার ক্ষেত্রেও ডিএনসিসির অবস্থান অনেকটা আশাব্যঞ্জক। তবে প্রাতিষ্ঠানিক (মান ২ দশমিক ১১) সক্ষমতা অর্জনে এখনও অনেক কাজ করতে হবে ডিএনসিসিকে।
অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে ইতোমধ্যেই ডিএনসিসি এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ৮শ ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পের আওতায় সরকারিভাবে মহানগরীর সব এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।’ রাজধানীতে উন্নতমানের এলইডি সড়কবাতি সংযোজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামী বছর মার্চ মাস নাগাদ ঢাকা উত্তরের কোনও এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকবে না।’
ইউডিআরআই প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকার প্রতিনিধি তাকাতোশি নিশিকাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স বিভাগের ডিন ড. এ এস এম মাকসুদ, সিড এশিয়ার বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রাজিব শুক্লা প্রমুখ। ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

আরও পড়ুন-

৪৩ কুমিরছানা গেল কার পেটে?

বিশেষ বাহিনীর আরও দুই কর্মকর্তা আসতেন লাইফ স্কুলে!

/ওএফ/টিআর/