আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে টানা অবস্থানের পর শাহবাগ অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার (৯ মে) বিকাল ৫টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে থেকে শাহবাগ চত্বরে এসে রাস্তা ‘ব্লক‘ করেন দেন তারা।
এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেন এনসিপি’র নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর রাত ১০টার দিকে সেখানে অবস্থান নেন। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এনসিপির পাশাপাশি হেফাজতে ইসলাম, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন ইসলামপন্থী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন। সকালে জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কয়েকটি দল এতে যোগ দেয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঘোষণা দেন, জুমার পর যমুনার পূর্ব পাশে বড় জমায়েত ও বিক্ষোভ চলবে। ইসলামপন্থী বিভিন্ন দলের নেতারাও এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন। পাঁচটি পিকআপ ভ্যান জোড়ায় মঞ্চ তৈরি হয়। জুমার পর সেখানে বড় জমায়েত হয় এবং শেষে হাসনাত শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেন।
এসময় হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এখন থেকে রাস্তা ব্লক করবো। আমরা এখান থেকে গিয়ে শাহবাগ অবরোধ করবো। যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হবে না, ততক্ষণ আমরা শাহবাগ ছাড়বো না।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইন্টেরিমের (অন্তর্বর্তী সরকারের) কানে আমাদের দাবি পৌঁছায়নি। তাই আমরা সমাবেশস্থল থেকে শাহবাগ অবরোধে যাচ্ছি। দাবি না আদায় পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবো।
‘আওয়ামী লীগকে কোন কারণে রাজনৈতিক দল বলা হয়’ প্রশ্ন রেখে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা শুনতে পাচ্ছি প্রধান উপদেষ্টা নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসার চেষ্টা করছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে তিনি নাকি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন! আওয়ামী লীগ কোনোভাবে রাজনৈতিক দল নয়। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ বাকশাল তৈরি করে এ দেশে গণতন্ত্রের পরিবর্তে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেছিল। আওয়ামী লীগের লুটপাটের কারণে দুর্ভিক্ষের কারণে ১৫ লাখ মানুষ না খেয়ে মারা গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের হাতে এ দেশের মানুষের রক্ত লেগে আছে। আওয়ামী লীগ ভারতের সহায়তায় দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের হত্যা করেছিল।’
এরপরই আন্দোলনকারীরা যমুনা ছেড়ে শাহবাগ এসে অবরোধ করেন। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সোয়া ৫টা) শাহবাগ অবরোধ করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।