‘আপন জুয়েলার্সের অবৈধ হলে সবার সোনাই অবৈধ’

বাজুসের সংবাদ সম্মেলনে নেতারাবাংলাদেশের সব দোকানে সোনার জোগান আসে একইভাবে। আপন জুয়েলার্সের সোনা অবৈধ হলে সবার সোনাই অবৈধ। আপনারা (শুল্ক গোয়েন্দা) বলছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবসায়ীদের দোকানে অভিযান চালাবেন। আমি অভিযোগ দিচ্ছি। এখন আপনারা কি করেন দেখব। বুধবার (৭ জুন) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি এনামুল হক খান।

তিনি বলেন, বনানীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপন জুয়েলার্সে যেভাবে অত্যাচার করা হয়েছে এটাকে আমরা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সঙ্গে তুলনা করছি। এই ঘটনাকে নিন্দা জানাচ্ছি। এভাবে স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে পথে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপন জুয়েলার্সকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রশাসন যেভাবে হয়রানি শুরু করেছে, তা বলার ভাষা নেই। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মইনুল খান প্রতিদিন সকালে উঠে জুয়েলার্স ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেন। এসব কারণে আমাদের প্রায় সব জুয়েলারি দোকানে অর্ডার দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের ধারণা মইনুল খান যেকোনও সময় আমাদের সব দোকান বন্ধ করে দেবেন। জুয়েলারি সমাজকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়েছে লেগেছেন তারা। আমাদের ২৮ লাখ পরিবার আজ পথে বসতে বসেছে। কর্মচারিদের আমরা বেতন দিতে পারছি না।

সংগঠনের এই নেতা বলেন, সংগঠনের দায়িত্বশীল একজন হিসেবে বলছি, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আপন জুয়েলার্সের সোনা আটক করা হয়েছে। অত্যাচার করা হচ্ছে।

শুল্ক গোয়েন্দার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট দেখাতে না পারায় আপন জুয়েলার্সের কাছ থেকে আটক করা সোনা জব্দ করা হয়েছে, তাহলে কেনও আপনারা অত্যাচার বলছেন? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক খান বলেন, আপন একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। হাজারও শ্রমিক এটার সঙ্গে যুক্ত। পৃথিবীর কোথাও এমন নজির নেই এভাবে দোকান আটক করার। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হয়নি। শুল্ক গোয়েন্দারা সোনা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আপন জুয়েলার্সের পক্ষ থেকে যে কাগজ জমা দেওয়া হয়েছে, তা তিনি (মইনুল খান) মানছেন না। একটি মানুষ দশবার বিদেশ গেছে। সোনা নিয়ে এসেছে। এতে অপরাধ কি? আপনি যদি বৈধভাবে ট্যাক্স দিয়ে সোনা আনেন আর আমি ব্যবসার প্রয়োজনে আপনার কাছ থেকে সেই স্বর্ণ কিনি তাহলে অপরাধ কোথায়। সম্পূর্ণ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে বনানীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই কাজগুলো করা হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।

বাজুসের সংবাদ সম্মেলনে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের জব্দ করা সোনা ফেরত দিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সোনা ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাজুস। একই সঙ্গে সোনা সংক্রান্ত নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ১১ জুন থেকে অনির্দিষ্টকালে জন্য দেশের সব স্বর্ণের দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। এছাড়া ১২ জুন অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ ও ১৫ জুন সব সোনা ব্যবসায়ীদের নিয়ে ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশের ২৮ লাখ সোনা ব্যবসায়ীকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

/আরজে/এসএমএ/

 

আপন জুয়েলার্সের অবৈধ হলে সবার সোনাই অবৈধ