উল্টোপথের বাস প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডিএমপির বার্তা

 

ডিএমপিরাজধানীতে সাত সরকারি কলেজ ও দুই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাস যেন ট্রাফিক আইন মেনে চলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এই বার্তাকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। ডিএমপি ও নয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বাংলা ট্রিবিউনকে এই চিঠির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই বিকালে বাংলামোটর এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বাস উল্টোপথে ফার্মগেটের দিকে যেতে শুরু করে। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট কাওসার হামিদ সঠিক পথে বাস তিনটিকে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও চালকরা তা অমান্য করে উল্টোপথে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় সার্জেন্ট বাসকে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করলে বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা এসে তাকে মারধর করেন। ঘটনার পরদিন সার্জেন্ট কাওসার বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও প্রকাশ্যে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরের অভিযোগ আনা হয়।

ওই ঘটনার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে উল্টো পথে বাস চালানোর কারণ জানতে চেয়েছে ডিএমপি। এমনকি ভবিষ্যতে উল্টোপথে বাস না চালানোর জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে ওই চিঠিতে।

ডিএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ) মাসুদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনার পর ডিএমপি কমিশনার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত তাদের জানানো হয়েছে।’

ডিএমপির কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নুর মোহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভিসি স্যার চিঠি পেয়েছেন গত বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই)। এখনও জবাব দেননি।’ শিগগিরই চিঠির জবাব দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

উল্টো পথে বাস চলা প্রসঙ্গে জবি প্রক্টর বলেন, ‘বাস উল্টো পথে চলা তো বেআইনি। আমরা তো শিক্ষার্থীদের উল্টো পথে চলতে বলি না। বরং উল্টো পথে যেন বাস না চলে, সেটাই আমরা বলে থাকি। তারপরও রাস্তায় নামলে ছাত্ররা বাস উল্টো পথে নিয়ে যায়। কয়েকদিন আগের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর আবারও তাদের এ বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে, বাসের ড্রাইভারদেরও নিষেধ করা হয়েছে।’

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাসের উল্টো পথে চলার প্রবণতা বন্ধে ট্রাফিক পুলিশ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তারপরও শিক্ষার্থীরা চালকদের উল্টো পথে যাওয়ার জন্য বাধ্য করে থাকেন। চালকরাও গন্তব্যে পৌঁছে পুনরায় ভাড়ায় যাত্রী টানার জন্য উল্টো পথে গিয়ে থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ, বাস মালিক ও চালকদের বৈঠক হলেই আমরা এ বিষয়ে কথা বলি। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের কড়া নির্দেশনা দেওয়া আছে, বাস যেন উল্টো পথে না যায়।’

প্রক্টর আমজাদ আরও বলেন, ‘আমরা চালকদের সতর্ক করেছি উল্টো চলা বাসগুলো আমরা চলতে দেবো না, বাদ দিয়ে দেবো। এমনকি শিক্ষার্থীরা বাসকে উল্টো পথে চলতে বাধ্য করলে তাদের বিরুদ্ধেও একাডেমিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

/টিআর/টিএন/