‘সিদ্দিকুরের দৃষ্টি ফেরার আশা নেই’

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে সিদ্দিকুরের বিছানার পাশে বসা তার মাসিদ্দিকুরের চোখের রেটিনার ৯০ শতাংশেরও বেশি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ের চিকিৎসক লিঙ্গম গোপাল। তিনি বলেছেন, রেটিনার ৯০ শতাংশের বেশি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সিদ্দিকুরের দৃষ্টি ফেরার আর আশা নেই। অপারেশনের পর সোমবার (৭ আগস্ট) সিদ্দিকুরকে দেখার পর লিঙ্গম গোপাল এ কথা বলেন। বিকালে সিদ্দিকুরের সঙ্গে কথা বলার পর তার বন্ধু ও সহপাঠী শেখ ফরিদ বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান।
শেখ ফরিদ জানান, সিদ্দিকুরের দৃষ্টি ফেরার বিষয়টিকে এখন ভাগ্যের ওপরেই ছেড়ে দিয়েছেন তারা। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত শনিবারও (৫ আগস্ট) সিদ্দিকুর বাম চোখে কিছুটা আলো অনুভব করছিল। তাতে আমরা আশাবাদী হয়েছিলাম। কিন্তু আজ (সোমবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিদ্দিকুরের সঙ্গে কথা হয়েছে। সিদ্দিকুর জানিয়েছে, ডাক্তার তাকে দেখে গেছেন। কিন্তু তিনি কোনও আশার কথা শোনাতে পারেননি।’
ফরিদ বলেন, ‘সিদ্দিকুরের রেটিনার ৯০ শতাংশই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তার দৃষ্টি ফেরার আশা এখন ভাগ্যের ওপরেই ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসক।’
এ অবস্থায় সিদ্দিকুরকে নিয়ে কী করা হবে জানতে চাইলে শেখ ফরিদ বলেন, ‘ওখানকার চিকিৎসকরা তো চেষ্টা করলেন। কিন্তু কোনও লাভ হলো না। দৃষ্টি না ফিরলে তো কিছু করার নেই। এখন ওখানকার চিকিৎসকরা ওষুধ দেবেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসবে। তারপর দেখা যাবে কী হয়।’
সিদ্দিকুর কী বলেছেন জানতে চাইলে ফরিদ বলেন, ‘সিদ্দিকুর বলে, ‘আগের পরীক্ষাতে দৃষ্টি ফেরার সম্ভাবনা না থাকা সত্ত্বেও ডাক্তাররা তো আমার অপারেশন করেছে। কিন্তু আর তো কিছু করার নেই। এখন ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিলাম সবকিছু।’’
সিদ্দিকুরের বড় ভাই নওয়াব আলীর সঙ্গেও কথা হয়েছে জানিয়ে শেখ ফরিদ বলেন, ‘নওয়াব ভাই জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) আবার চিকিৎসক দেখবেন সিদ্দিকুরকে, ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে জানাবেন। তারপর আগামী ১১ আগস্ট দেশে ফিরে আসবেন তারা।’
উল্লেখ্য, পরীক্ষার রুটিন ও তারিখ ঘোষণাসহ কয়েকটি দাবিতে গত ২০ জুলাই শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া নতুন সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। তাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, সিদ্দিকুরের ডান চোখে আলো ফেরার সম্ভাবনা নেই, বাম চোখেও দৃষ্টি ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের তত্ত্বাবধানে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসরা তাকে চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠান।

আরও পড়ুন-

‘বিশ্বজিৎ’ শব্দটি উত্তেজিত করে তোলে তাদের!

রাজন, তুফানের মতো কর্মী দরকার নাই: ওবায়দুল কাদের

/জেএ/টিআর/