জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটন প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় মেয়েদের বড় খেলোয়াড়, ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন ও বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন চালাতো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। র্যাবের দাবি, অ্যাসোসিয়েশনের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে খেলোয়ারদের ধর্ষণের মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা ও গর্ভপাত করাতো, এমনকি মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে প্রবেশ করে তাদের জোরপূর্বক নগ্ন ভিডিও ধারণ করে রাখতো। এসব কাজে তাকে সহায়তা করতো অ্যাসোসিয়েশনের আরেক নারী খেলোয়াড় সুমাইয়া।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে র্যাবের (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-১২ এর একটি অভিযানিক দল রাজধানীর শাহ আলী ও মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে নিউটন (৬৫) ও তার সহযোগী সুমাইয়াকে (২৫) গ্রেফতার করে।
এর আগে এ ঘটনায় সকালে শেরেবাংলা নগর থানায় জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের একজন নারী খেলোয়াড় রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা (নং-৩০) দায়ের করেন।
শনিবার (১৮ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাওরান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার নিউটন ও সুমাইয়া ধর্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। নিউটন অ্যাসোসিয়েশনের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনৈতিকভাবে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতো। এভাবে কেউ অন্তঃসত্ত্বা হলে তাদের গর্ভপাত করাতো। এমনকি সে অনুশীলনের আগে মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে প্রবেশ করে জোরপূর্বক তাদের ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ এবং নগ্ন ছবি তুলে রাখতো। পরে ধারণ করা নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে বারবার ধর্ষণ করতো।
মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেফতার নিউটন অ্যাসোসিয়েশনের গ্রেফতার অপর এক নারী খেলোয়াড়ের সহায়তায় অন্য নারী খেলোয়াড়দের মিথ্যা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌন হয়রানিসহ জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করতো। ভুক্তভোগী নারী গত দুই বছর যাবত তার অধীনে জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আসছিল। খেলার প্রশিক্ষণকালীন সময়ে নিউটন বিভিন্ন অজুহাতে তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করতো। প্র্যাকটিস শেষে চেঞ্জিং রুমে পোশাক পরিবর্তন করার সময় গ্রেফতার নারী ভুক্তভোগীকে রুমের মধ্যে আটকে রেখে রফিকুল ইসলামকে ডেকে আনে। পরে রফিকুল তাকে ধর্ষণ করে। এরপর গ্রেফতার নারী খেলোয়াড় রুমে প্রবেশ করে মোবাইল ফোনে ভিকটিমের নগ্ন ছবি ধারণ করে এবং কাউকে জানালে নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর নিউটন ভুক্তভোগীর নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
আরাফাত ইসলাম বলেন, এভাবে নিউটন একাধিক নারী খেলোয়াড়কে ধর্ষণ ও শারিরীকভাবে নির্যাতন করেছে। কতজন নারীকে ধর্ষণ করেছে তা তদন্তের পর জানা যাবে।