জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসছে বাংলাদেশে। ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের শস্য উৎপাদন ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে এবং নতুন করে নানা ধরনের রোগবালাইও ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন জলবায়ু বিজ্ঞানী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে জুম বাংলাদেশ ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, ওশান নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস ও সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরামের যৌথ এক জাতীয় সেমিনারে জলবায়ু বিজ্ঞানী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। ‘জলবায়ুর পরিবর্তন ও তাপপ্রবাহ প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এ সেমিনারে পরামর্শক হিসেবে ছিল বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)।
সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে খ্যাতিমান পানি ও জলবায়ু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। তিনি বলেন, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশের প্রতি মানুষ যে অত্যাচার চালিয়েছে, অসহনীয় তাপ এবং শৈত্য প্রবাহ দিয়ে তার প্রতিশোধ নিচ্ছে প্রকৃতি। আগামী দিনে এসব আরও ভয়াবহ দুর্যোগ হিসেবে আঘাত হানতে পারে বলে জানান তিনি।
স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, রাজধানী ঢাকায় ৩৩ হাজার দখলদার ২ কোটি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনকে জিম্মি করে রেখেছে। তারা নগরীর ৭০ শতাংশেরও বেশি খাল, নদী ও জলাভূমি দখল করে বহুতল ভবন গড়ে তুলেছেন— যা ঢাকা শহরকে বিশ্বের অন্যতম দূষিত নগরীতে পরিণত করেছে।
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের বাতাসে যে হারে দূষণ ও বিষাক্ত ধূলিকণা বাড়ছে, তাতে প্রতিবছর কয়েক লাখ মানুষ রোগাক্রান্ত হচ্ছেন। এসব দূষণ প্রতিরোধে মহাপরিকল্পনা না নিলে প্রতিবছর কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যুও হতে পারে বলে জানান তিনি।
সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব সেমিনারে জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনে বাংলাদেশের উপকূলের ৩০ শতাংশেরও বেশি জমি ইতোমধ্যে লবণাক্ত হয়েছে। ফসল-জীবিকা হারিয়েছেন অন্তত ২০ লাখ মানুষ। যাদের বেশির ভাগই জলবায়ু উদ্বাস্তু হয়ে শহরে আসছেন। এসব মানুষের দুর্বিষহ দিন কাটছে।
জুম বাংলাদেশ ইয়্যুথ ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন, প্রধান উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসাইন, এবং সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ শাহীন প্রধান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।