‘স্বামীর দেওয়া আগুনে’ দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু

বার্ন ইউনিট, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালরাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে দগ্ধ গৃহবধূ লিপি আক্তার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।  

অভিযোগ রয়েছে, ওই গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল তার স্বামী জাহাঙ্গীর। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে কামরাঙ্গীরচরের আলীনগরের ইসলাম চেয়ারম্যান বাড়ির পাশের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

ঢামেক হাসপাতালের  বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানিয়েছেন, লিপির শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল।

এ ঘটনায় লিপির মা হাজেরা বেগম বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেছেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ মামলার প্রধান আসামি লিপির স্বামী জাহাঙ্গীরকে বুধবার দুপুরে হাসপাতাল এলাকা থেকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে। 

লিপির মা হাজেরা বেগম বলেন, ৯ বছর আগে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে লিপির বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।  নিউমার্কেট এলাকায় ফল বিক্রি করে জাহাঙ্গীর। সে জুয়া খেলতো। এ নিয়ে লিপির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের প্রায়ই ঝগড়া হতো। এছাড়া, লিপিকে তার শাশুড়ি, দেবর ও ননদেরা মারধর করতেন। ব্যবসার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে দেওয়া টাকা জাহাঙ্গীর জুয়া খেলে উড়িয়ে দিতো।

হাজেরা বেগম আরও বলেন, ১৫ দিন আগে জাহাঙ্গীর, তার মা ও বোনেরা লিপিকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেন। পরে আবার এসে তারা ফিরিয়ে নিয়ে যান। যাওবার সময় লিপি তার ফুফুর কাছ থেকে আট হাজার টাকা ধার করে জাহাঙ্গীরকে ব্যবসার জন্য দেন। কিন্তু ওই টাকায় জুয়া খেলে জাহাঙ্গীর। এ নিয়ে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে লিপির সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এর জের ধরে রাত ২টার রাতে লিপির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় জাহাঙ্গীর। পরে তার দেবর রনি তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

নিহত লিপির মা অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের মা-বোন ও ভাইয়ের ইন্ধন ছিল। ছয় বোনের মধ্যে লিপি তৃতীয় ছিলেন।

কামরাঙ্গীরচর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, এ ব্যাপারে লিপির মা হাজেরা বেগম  চার জনকে আসামি করে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেছেন। মামলার প্রধান আসামি লিপির স্বামী জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হচ্ছে জাহাঙ্গীরের ভাই রনি, বোন সালমা ও মা কাজল বেগম।