রায়ে সন্তুষ্ট প্রসিকিউশন, পলাতকদের আত্মসমর্পণে অনুরোধ আসামিপক্ষের

ঘোড়ামারা আজিজসহ মামলার ছয় আসামি

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা ও গাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য আবু সালেহ মো.আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় জনকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে প্রসিকিউশন পক্ষ। অন্যদিকে, ন্যায়বিচার পেতে মামলার পলাতক আসামিদের আত্মসমর্পণ করে আপিলের অনুরোধ জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

বুধবার (২২ নভেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ২৯তম রায় ঘোষণার পর পৃথক পৃথক প্রতিক্রিয়ায় মামলার আইনজীবীরা এসব কথা বলেন।

প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ হলো, দেশে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরে ওই এলাকাকে  (গাইবান্ধা জেলায়) পুরো নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য সেখানকার ১৩ জন সাবেক এবং ওই সময়ে কর্মরত চেয়ারম্যান, মেম্বারকে ডেকে নেয়। এরপর তাদের ক্যাম্পে আটক রেখে একসঙ্গে হত্যা করে। আদালত এসব অভিযোগ গ্রহণ করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের এ রায়ে প্রসিকিউশন সন্তুষ্ট।’

প্রসিকিউটর সুমন আরও বলেন, ‘রায় ঘোষণাকালে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, এসব আসামিদের অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে ভিন্ন অবস্থান থাকতে পারে। কিন্তু এটি যদি একটি পরিকল্পনা মাফিক কাজ হয়, তাহলে অপরাধের মাত্রা সবার ওপরে সমানভাবে বর্তাবে। এ কারণে সবাইকে সমান সাজা দেওয়া হয়েছে।’  এ রায়ে আব্দুল আজিজকে কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মামলায় তিনটি অভিযোগ ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ তিনটি অভিযোগ প্রমাণে যেসব সাক্ষী হাজির করেছে, তখন তাদের অধিকাংশের বয়স ছিল ১৩/১৪ বছর। একাত্তর সালে এই সাক্ষীরা ছিল নাবালক। একজন নাবালক বা ১৩/১৪ বছরের  সাক্ষীর পক্ষে এ ধরনের ঘটনা বর্ণনা করা অবিশ্বাস্য।’

আসামিপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘আমি মনে করি, রাষ্ট্রপক্ষ মাত্র দুটি ডকুমেন্ট জমা দিয়েছে, যা  অপরাধ প্রমাণে তা যথেষ্ট না।’ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এ মামলার পলাতক পাঁচ আসামির উদ্দেশে তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত এই আইনজীবী অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমি বলবো, এ মামলার পলাতক আসামিরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যদি আত্মসমর্পণের পর আপিল দায়ের করে, তাহলে তারা সাক্ষ্য প্রমাণের বিবেচনায় উচ্চ আদালত থেকে খালাস পাবে।’


আরও পড়ুন: 
ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় জনের মৃত্যুদণ্ড

কে এই ‘ঘোড়ামারা’ আজিজ