সূত্র জানায়, পুলিশের সেই এসআই –এর নাম আশিকুর রহমান। মামীকে থাই এয়ারওয়েজের ব্যাংককগামী ফ্লাইটে এগিয়ে দিতে উড়োজাহাজ উঠে পড়েন তিনি। ব্যাংককগামী ফ্লাইটটি (টিজি-৩৪০) যাত্রী নিয়ে রাত ২টায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। রাত ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে সব যাত্রীদের আসনে বসিয়ে উড়োজাহাজ উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিতে গেলে এসআই আশিকুর রহমান জানান তিনি যাত্রী নন, কেবিন ক্রুদের তিনি অনুরোধ জানান তাকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য।
একটি এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা জানান, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইকাও) নিয়ম অনুসারে যাত্রী এবং ফ্লাইটের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া কোনও যাত্রীর স্বজন বা ব্যক্তি উড়োজাহাজে উঠতে পারবেন না। একই সঙ্গে ফ্লাইটের দায়িত্বে নিয়োজিত পাইলট, কেবিন ক্রু, প্রকৌশলী ছাড়া কোনও ব্যক্তি বা যাত্রী ইউনিফরম পরে আকাশ পথে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
সূত্র আরও জানায়, যাত্রী না হয়েও উড়োজাহাজে পুলিশের সেই এসআই থাকায় পুনরায় উড়োজাহাজটি বোর্ডিং ব্রিজে ফেরত আনা হয়। সেই ফ্লাইটের পাইলট নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ফ্লাইটটি ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান। সেই পুলিশ কর্মকর্তা আশিকুর রহমানকে সিভিল এভিয়েশন ও ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুনরায় তল্লাশি করে পাইলটে ফের ফ্লাইট নিয়ে যেতে অনুরোধ করেন সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, বিমানবন্দরে মামীর বোডিং পাস ইস্যুর পর ইমিগ্রেশন পুলিশের নিজের ব্যাচমেটদের সহায়তায় যাত্রী না হয়েও গ্রিন চ্যানেলে ঢুকে পড়েন এসআই আশিকুর। পুলিশ পরিচয় দিয়ে একই ভাবে গ্রিন চ্যানেল পার হয়ে উড়োজাহাজে ওঠার আগে চেকিং পয়েন্টে পার হয়ে হোল্ডিং লাউঞ্জে গিয়ে অবস্থান নেন। উড়োজাহাজের প্রবেশ পথে থাই এয়ারওয়েজের কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে উড়েজাহাজে উঠে পড়েন আশিকুর। উড়োজাহাজ ছাড়ার আগ মুহূর্তে পাইলটের ঘোষণার সময়ও নিরব ছিলেন আশিকুর। উড্ডয়নের আগ মুহূর্তে তিনি উড়োজাহাজে থেকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য কেবিন ক্রুদের অনুরোধ করেন।
এ প্রসঙ্গে একটি এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা বলেন, যাত্রীরা উড়োজাহাজে ওিঠার আগে কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে আসতে হয়। পাসপোর্ট, বোডিং পাসসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র,তল্লাশি ছাড়া কারও ইমিগ্রেশনই পার হওয়ার কথা নয়। যাত্রী না হয়ে ইমিগ্রেশন পার হয়ে বোডিং ব্রিজে হয়ে উড়োজাহাজ প্রবেশের কোনও সুযোগ নেই। দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের এক উপ পরিচালক বলেন, ‘ঘটনাটির ইমিগ্রেশন পুলিশ তদন্ত করবে। একই সঙ্গে বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে জানানো হবে।’