৪৪ যুক্তিতে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়ার আপিল

প্রস্তুত করা হচ্ছে আপিলের নথিজিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিশেষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করা হয়েছে।  মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে আপিল দায়ের করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আপিলের ফাইলিং আইনজীবী হলেন দুদক আইনজ্ঞ অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান।

এ তথ্য জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি নিশ্চিত করেন খালেদা জিয়ার আপিলের নম্বর হচ্ছে ‘ক্রিমিনাল আপিল নং-১৬৭৬/১৮।’

১২২৩ পৃষ্ঠার আপিল আবেদনে ৪৪টি যুক্তি দেখানো হয়েছে। এসব যুক্তিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে খালাসের আবেদন করা হয়েছে।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আপিল মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

এর আগে খালেদা জিয়ার আপিল ও জামিনের বিষয়ে তার প্যানেল আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতি ভবনে কয়েক দফা জরুরি বৈঠক  করেন । 

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ৪০৯ ও ১০৯ ধারার অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় রায় ঘোষণা করেন আদালত। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।

ওই রায়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অপর আসামি তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানাও করা হয়। 

এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলসহ তিনটি পৃথক আবেদন করার বিষয়ে ভাবছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এ নিয়ে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘প্রথমে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করবো। দ্বিতীয়ত, আপিল গ্রহণের পর জামিন আবেদন করবো। তৃতীয়ত, নিম্ন আদালতের সাজা স্থগিত চেয়ে আবেদন করবো।’

উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত হলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণে বাধা আইনত বাধা থাকবে না বলেও জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী।

তবে রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘একজন আইনজীবী হিসেবে আমি বলতে পারি বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী ২ বছর সাজাপ্রাপ্ত কোনও অপরাধী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। তবে উচ্চ আদালত যদি উনার (খালোদা জিয়া) জামিন আবেদন গ্রহণ করেন তাহলে তার সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা থাকবে না।’

উল্লেখ্য,জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর মামলাটি করে দুদক। এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।