বাসে বসে খাতা দেখা সেই মাদ্রাসা শিক্ষকের মুচলেকা

শিক্ষক আশরাফুল ইসলামগোপনীয়তা রক্ষা না করে রাজধানীর একটি বাসের সিটে বসে ফাজিল (ডিগ্রি সমমান) পরীক্ষার খাতা দেখায় মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া সিনিয়র কামিল মাদ্রাসার প্রভাষক আশরাফুল ইসলামকে শোকজ করে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। এ ঘটনার দায় স্বীকার করে লিখিত মুচলেকা দিয়েছেন তিনি। মুচলেকায় আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে আর এমন কাজ করবেন না।’

গত ২১ ফেব্রুয়ারি আশরাফুলের বাসে বসে খাতা দেখার দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেন এহসান আহমেদ সুজন নামের এক ব্যক্তি এবং তিনি সেটি নিজের ফেসবুক পোস্টে আপলোড করেন। মুহূর্তে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।

জানতে চাইলে এহসান আহমেদ সুজন গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি ঘটনাটি দেখেছি। এমন ঘটনা দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। তাই ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি ফেসবুকে এই ভিডিও পোস্ট করার পর একজন ওই শিক্ষককে চিনতে পেরে আমাকে তার নাম ও ঠিকানা পাঠিয়েছেন।’

এরপর বাংলা ট্রিবিউনের মানিকগঞ্জ প্রতিনিধির মাধ্যমে শিক্ষক আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘বাসে বসে খাতা দেখা আমার মোটেও ঠিক হয়নি। এতে গোপনীয়তা ভঙ্গ হয়েছে।’ তিনি জানান, তিনি এবার বোর্ড থেকে তিনশ’ খাতা পেয়েছেন। সেসব খাতা দ্রুত জমা দেওয়ার চাপ রয়েছে। এ জন্য অলস সময়টুকু খাতা দেখে কাজে লাগিয়েছেন।

এদিকে আলোচিত এ ঘটনার পর এর ব্যাখ্যা চেয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড শিক্ষক আশরাফুল ইসলামকে চিঠি দেয়। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাহাদাত হোসেনের কাছে লিখিত মুচলেকা দেন। তিনি লিখেছেন, ভবিষ্যতে কখনও খাতা দেখার ক্ষেত্রে গোপনীয়তা ভঙ্গ করবেন না। যেহেতু এটা গোপনীয়, সেটা গোপনীয়তার সঙ্গে দেখবেন।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোরশেদ বিপুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাকে (আশরাফুল ইসলাম) আমরা শোকজ করেছিলাম, পরে তিনি মুচলেকা দিয়েছেন।’

মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া সিনিয়র কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান জানান, তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক যে কাজটি করেছেন, তা নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থি। এতে প্রতিষ্ঠানের সুমানও ক্ষুণ্ণ হয়েছে।