আজ বুধবার (২৮ মার্চ) ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ও নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত যাত্রীদের জন্য গঠিত চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিকেল ৩টার দিকে ওদের (স্বর্ণা, মেহেদী ও রাশেদ) হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। ওরা ভালো আছে।’
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের আগ মুহূর্তে বিধ্বস্ত হয়। ওই ফ্লাইটে ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু ছিলেন। এ ঘটনায় ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত হন, আহত হন আরও ১০ বাংলাদেশি। ওই ফ্লাইটেই নেপাল ভ্রমণে যাচ্ছিলেন এ্যানি, তার স্বামী ফারুক আহমেদ প্রিয়ক ও সন্তান প্রিয়ন্ময়ী; এ্যানির দেবর মেহেদী ও তার স্ত্রী স্বর্ণা। দুর্ঘটনায় নিহত হন প্রিয়ক ও প্রিয়ন্ময়ী। এ্যানি, স্বর্ণা ও মেহেদীকে আহত অবস্থায় নেপাল থেকে ১৬ মার্চ দেশে এনে ভর্তি করা হয় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। পরদিন ১৭ মার্চ দেশে আনা হয় আরেক আহত রাশেদ রুবাইয়াতকেও।
স্বর্ণা ও মেহেদীকে ১২ দিন এবং রাশেদকে ১১ দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর আজ বুধবার ছাড়পত্র দিয়েছেন বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা। বোন ও দুলাভাইকে (স্বর্ণা ও মেহেদী) বাড়ি নিয়ে যাওয়ায় স্বস্তি জানিয়ে সৈয়দ আতাউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কৃতজ্ঞতা যেমন সৃষ্টিকর্তার প্রতি, তেমনি চিকিৎসকদের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি, যারা তাদের চিকিৎসায় সার্বক্ষণিক সহায়তা করেছেন ও দোয়া করেছেন তাদের সবার প্রতি।’
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তারা যখন হাসপাতাল ছাড়েন, তখন ঢামেকের ছয়তলায় বার্ন ইউনিটের কেবিন ব্লকে এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়। কর্তব্যরত আনসার, নার্স, ওয়ার্ড বয়—সবাই এগিয়ে আসেন তাদের বিদায় দিতে। এই আবেগ ছুঁয়ে যায় স্বর্ণা, মেহেদী ও তাদের নিতে আসা স্বজনদেরও।
হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে স্বর্ণা, মেহেদীদের। স্বর্ণার ভাই আতাউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিকিৎসকরা আমাদের তাদের নম্বর দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে আসার কথা জানিয়েছেন। তবে এখন তারা দুজনেই ভালো আছেন।’
ডা. সামন্ত লাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাদের কাউকে দুই সপ্তাহ পরে, কাউকে তিন সপ্তাহ পরে ফলোআপে আসতে বলা হয়েছে। অন্য যারা এখানে ভর্তি আছেন, তারা সবাই ভালো আছেন। তবে সেরে উঠতে একটু সময় লাগবে।’
উল্লেখ্য, নেপালের দুর্ঘটনায় আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে চিকিৎসার জন্য একজনকে নেওয়া হয় দিল্লিতে, দুইজনকে সিঙ্গাপুরে। বাকি সাতজনকেই ভর্তি করা হয় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। এখানে গত সোমবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন শাহীন ব্যাপারী। এরমধ্যে কবির হোসেনকেও এখান থেকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর স্বর্ণা, মেহেদী ও রাশেদকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর এ্যানি ছাড়া ভর্তি আছেন শাহরিন আহমেদ।
আরও পড়ুন-
এইচএসসিতে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
একদিন এই মেয়েরাই ফুটবল বিশ্বকাপে খেলবে: প্রধানমন্ত্রী