তুরাগ বাসে যৌন হয়রানি: দোষীদের গ্রেফতারে ১৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনতুরাগ বাসে বেসরকারি উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারে ১৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৩ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর উত্তরার হাউজ বিল্ডিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ জানান শিক্ষার্থীরা। 

সংবাদ সম্মেলনে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে আন্দোলনের আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী পারভেজ হোসেন বলেন, ‘আগামীকাল মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলে দুপুর ১টা থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে আমাদের আন্দোলন আরও কঠোর হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দোষী কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে বাসটি শনাক্ত করা হয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছেন তারা।’ 

তবে যতক্ষণ পর্যন্ত এই ঘটনার কোনও সুরাহা পুলিশের পক্ষ থেকে না করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সড়কে তুরাগ পরিবহনের কোনও বাস চলতে দেওয়া হবে না এবং শিক্ষার্থীদের আটকে রাখা কোনও বাস মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে না বলে জানান পারভেজ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার না করা হলে এসময়ের পর জব্দ বাসের কোনও প্রকার ক্ষতি হলে এর দায়ভার উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও শিক্ষার্থী নেবে না। এর দায় বর্তাবে বাসের মালিকদের ওপর।’

গত ২১ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে তুরাগ বাসে যৌন হয়রানির শিকার হন। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে নেমে নিজেকে রক্ষা করেন তিনি। এই ঘটনায় পরদিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। 

পারভেজ হোসেন বলেন, ‘আমরা কিছু দাবি তুলে ধরছি–২৪ এপ্রিল দুপুর ১২টা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে; শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; প্রশাসনের কাছে ও মালিকপক্ষের কাছে বাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুনির্দিষ্ট পরিচয় থাকতে হবে, যাতে যেকোনও অপরাধে দ্রুত অপরাধীকে শনাক্ত করা যায়; মাদকের সঙ্গে জড়িত কোনও মালিক, চালক, হেলপার, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যেন পরিবহন ও পরিবহন সমিতির কোনও কাজে যুক্ত না হতে পারে; এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে বিষয়ে পরিবহন মালিকদের লিখিত অঙ্গীকার করতে হবে; ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির কাগজ ছাড়া ফিটনেসবিহীন কোনও গাড়ি যেন সড়কে চলাচল করতে না পারে।’