ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তায় তৎপর পুলিশ

ঈদে ফাঁকা রাজধানীতে বাড়তি নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বেশির ভাগ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। ঈদের আনন্দ উপভোগ অনেকেই ছুটে গেছেন গ্রামে প্রিয়জনের কাছে। আবার কেউবা এই ছুটিতে পরিবার নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে পছন্দের জায়গায় বেড়াতে গেছেন। ফলে রাজধানী এখন অনেকটাই ফাঁকা। সেক্ষেত্রে অভিজাত আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার বাসা-বাড়ির নিরপত্তার প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এসময়ে খালি বাসায় চুরি, রাস্তায় লোকজন কম থাকায় ছিনতাইয়ের সম্ভাবনা থাকে। তবে এই শঙ্কা দূর করতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তা দিতে প্রধান সড়কগুলো ছাড়াও পাড়া- মহল্লার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। একইসঙ্গে সর্বত্র টহল দিচ্ছে  পুলিশ । 

সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তরা, গুলশান, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর, বারিধারা, উত্তরা, রমনাসহ পরনো ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে রাজধানীজুড়ে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা কিছুক্ষণ পরপরই টহল দিচ্ছে। 

এর পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন মাদক স্পটগুলোতেও বিশেষ নজরদারি থাকছে। কোথাও যাতে মাদক বিক্রি না হয়, সেজন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  

ডিএমপি’র রমনা বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। প্রতিটি এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি মাদকের ওপর বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। ঈদের ছুটিতেও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলবে।’ 

রাজধানীতে পুলিশি তৎপরতাঈদের ছুটিতে রাজধানীতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা দিতে সমন্বিতভাবে কাজ করবেন র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। 

গত ১১ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সদর দফতরে এক বৈঠকে ঈদের নিরাপত্তা বিষয়ে রাজধানীর সব থানায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। ওই বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে অনেকে গ্রামে চলে যাবেন।  এ কারণে রাজধানীতে অনেক বাসা-বাড়ি ফাঁকা থাকে। এসময় প্রতিটি থানা এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হবে। পাড়া- মহল্লার প্রতিটি সড়কেই পুলিশের টহল বাড়ানো হবে।’ কোথাও কোনও অপরাধ কর্মকাণ্ড যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে নজর রাখারা জন্য সব পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া, বিপণী বিতান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট, বসতবাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য রাজধানীর বাসিন্দাদের পরামর্শও দেন ডিএমপি কমিশনার। 

এদিকে, ঈদের ছুটিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীতে থাকছে র‌্যাবের টহল টিম ও মোটরবাইক পেট্রোলিং। এছাড়া,সার্বক্ষণিক র‌্যাবের  গোয়েন্দা নজরদারিও  বাড়ানো হয়েছে।

বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের ঝোঁক বেড়ে যায়।  তারা বাড়তি আয়ের উদ্দেশ্যে এসময় মাদক মজুত করে ও বিভিন্ন চালান নিয়ে আসে। এবার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে এবং ঈদের মধ্যেও তা অব্যাহত থাকবে। মাদকের বিষয়ে কোনও  ছাড় না দেওয়ার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার রাজধানীর সব থানায় বিশেষ নির্দেশনা দেন।

আদাবর থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কাউসার আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনক বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব থেকেই আমরা সবসময় তৎপর থাকি। তরপরও আমরা বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছি। এর জন্য প্রত্যেকে বাড়ির সামনে অথবা রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনেরও পরামর্শ দিয়েছি।’

ঈদের ছুটিতে রাজধানীতে বাড়ানো হয়েছে পুলিশি নিরাপত্তা

 

আবাসিক এলাকা ও পাড়া-মহল্লার নিরাপত্তা

ঈদে ছুটিতে ঢাকার বাইরে গেছেন যারা,তাদের বাসা-বাড়িগুলো এখন অনেকটাই ফাঁকা। এজন্য রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, পাড়া-মহল্লায় ফাঁকা ফ্ল্যাট বাড়ির নিরাপত্তা দিতে বিশেষ দায়িত্ব পালন করবে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা পুলিশ।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর বাংলা ট্রিবউনকে বলেন, ‘ঈদের দিন থেকেই আমরা অতিরিক্ত টহলের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া, এলাকাভিত্তিক ফুট পেট্রোলিং থাকবে।’

উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিক বাংলা ট্রিবউনকে বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ঈদের ছুটিতে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। পাশাপাশি সড়কে যাতে কোনও ছনিতাই না ঘটে, সে বিষয়েও আমাদের নজরদারি থাকছে।’