শনিবার (১০ নভেম্বর) সকালে আজমপুর চৌরাস্তায় গিয়ে সিসি ক্যামেরার খুঁটিতে কোনও সিসি ক্যামেরা দেখা যায়নি। তবে আজমপুরের বিভিন্ন দোকানের সামনে সিসি ক্যামেরা দেখা গেছে। ডিএমপি জানিয়েছে, আজমপুরের ওই খুঁটির ক্যামেরাগুলো অকেজো হয়েছে। পরবর্তীতে চারটি ক্যামেরা ওই এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে। সেগুলো এখন কাজ করছে।
সররেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তত্ত্বাবধানে ‘ল অ্যান্ড অর্ডার কোঅর্ডিনেশন কমিটির’ আওতায় পাবলিক-প্রাইভেট প্রজেক্টের মাধ্যমে বসানো সিসি ক্যামেরার প্রায় অর্ধেকই নষ্ট বা অকার্যকর। সচল থাকা ক্যামেরাগুলো থেকে পাওয়া ফুটেজও অধিকাংশ ক্ষেত্রে অস্পষ্ট। এছাড়া লোডশেডিংয়ের সময় বেশিরভাগ ক্যামেরা না চলায় ওই সময়ের ফুটেজও পাওয়া যায় না। পিংক সিটি এলাকায় পাওয়ার সাপ্লাইয়ারের সমস্যার কারণে ক্যামেরাগুলো ঠিকঠাক কাজ করতে পারছে না। বিভিন্ন ঘটনায় এসব সিসি ক্যামেরা থেকে পাওয়া ফুটেজ অস্পষ্ট হওয়ায় ক্যামেরার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ছয়মাস-একবছর পর ক্যামেরাগুলোর ধারণ করা চিত্র অস্পষ্ট হয়ে যায়। তবে বর্তমানে নতুন ক্যামেরায় এই সমস্যা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে ডিএমপি।
ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজমপুরের চৌরাস্তায় ওই খুটিতে সিসি ক্যামেরার কী হয়েছে তা আমি বলতে পারবো না। তবে আমি ওই এলাকায় অনেক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছি। সেগুলো কাজ করছে।’
উত্তরা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, আবদুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দর, হাউজ বিল্ডিং থেকে ১১ নম্বর সেক্টর চৌরাস্তা এবং রাজলক্ষ্মী থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত সড়কে দোকানে বাসাবাড়িতে বিভিন্ন ক্যামেরা রয়েছে। যা নিরাপত্তায় সহযোগিতা করছে। তবে আবদুল্লাহপুর থেকে জসিমউদ্দিন পর্যন্ত বেশকিছু ক্যামেরা খোয়া গেছে এবং কিছু অকেজো হয়েছে তার ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু ক্যামেরার ওপরে ধুলোর আস্তরণ দেখা গেছে।
অপরদিকে, শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বিকালে গাবতলী গিয়ে দেখা গেছে, গাবতলী পুলিশ বক্সের সামনের সড়কের আইলাইনে একটি সরু খুঁটিতে লাগানো আছে ছয়টি সিসিটিভি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা। আমিনবাজারের দিকে খুঁটিটি হেলে পড়েছে। ফলে সড়কের দিকে মুখ করা ক্যামেরাগুলোর লক্ষ্য এখনও উল্টাপাল্টা হয়ে আছে। এছাড়াও ধুলোয় ক্যামেরার মুখগুলো ঢেকে আছে। ডিএমপি জানিয়েছে, যে ট্রাকটি এই খুঁটিতে ধাক্কা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, সেটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে এর জরিমানা আদায় করা হবে।
যাত্রাবাড়ী, চিটাগাংরোড এলাকায় সেভাবে মনিটরিং নেই। তবে উত্তরা থেকে যাত্রাবাড়ীর কাজলা পযন্ত ডিএমপি ক্যামেরা স্থাপণের কাজ চলছে। শিগগিরই যাত্রাবাড়ীর কাজলাতে ক্যামেরা স্থাপণ করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।
অন্যদিকে, বাবুবাজারে ক্যামেরা থাকলেও সেগুলো একটি নিরাপত্তা বাহিনীর অনুরোধে বন্ধ রাখা হয়েছে। সেখানে তারা কাজ করছে। তাই সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাজধানীতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার পর অপরাধ হ্রাস পেয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতেও কাজে লাগছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। তাই এবিষয়ে ডিএমপি আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে অর্থ, লজিস্টিক সাপোর্ট ও জনবলের কারণে এই প্রজেক্ট দ্রুত গতিতে আগাচ্ছে না।
ডিএমপির সিস্টেম অ্যানালিস্ট কর্মকর্তা শারমিন আফরোজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজমপুরে আমাদের সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ওই এলাকাটি মনিটরিং করা হয়। গুলশান, উত্তরা, গাবতলী, বাবুবাজারেও সিসি ক্যামেরা রয়েছে। যাত্রাবাড়ীতে শিগগিরই কাজ শুরু হবে। ডিএমপি এ নিয়ে কাজ করছে। কিছু জায়গায় পাওয়ার সাপলাইয়ের সমস্যা এবং অন্য কিছু কারণে মাঝেমাঝে ত্রুটি দেখা দেয়। তবে তাও ভবিষ্যতে থাকবে না।’