মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফজলুল হক খান ফরিদ ও এস এম শাহজাহান। তাদের সহযোগিতা করেন আইনজীবী সাইফুর রহমান রাহি। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩০ আগস্ট গোপালগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ইডেন কলেজের ছাত্রী সাদিয়া নূর মিতা। পরে মিতার মরদেহ বাড়ির পাশে পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মিতার বাবা লিয়াকত হোসেন মোল্লা গোপালগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মিতা যে ঘরে ঘুমিয়েছিল, সেখানে তার সঙ্গে একই বিছানায় তার আপন ছোট বোন অন্তরা এবং তার চাচাতো বোন শ্রাবণীও ঘুমিয়েছিল। তবে এজাহারে মিতাকে ঘর থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কাউকে সন্দেহ করার কথা উল্লেখ করা হয়নি।
পরবর্তীতে শ্রাবণী এবং শ্রাবণীর ভাই মনি, জনিসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করে পুলিশ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর শ্রাবণীকে বেশ কয়েকবার রিমান্ডে নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয় এবং এই জবানবন্দির ভিত্তিতে বিচারকার্য সম্পাদিত হয়।
এরপর মামলার বিচারকার্য শেষে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে মামলার আসামি নিপুণ, মামুন ও ডগু খন্দকারকে মৃত্যুদণ্ড, তুষার কাজী, জনি, শ্রাবণী ও শেখ নাজমুলকে যাবজ্জীবন এবং আসামি মনিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এরপর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও অন্যান্য আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ মামলা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে সক্ষম না হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ মামলার সব আসামিকে খালাস প্রদান করে রায় দেন হাইকোর্ট।