শাহজালালে ১৬ কেজি স্বর্ণ জব্দ

স্বর্ণের বার (ফাইল ছবি)হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি যাত্রীর প্রটোকলে এসেছেন সিরাজ নামের এক ব্যক্তি।  বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষে থেকেও নিয়েছেন প্রটোকল পাস (নম্বর-০০২৮)। বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল দিয়ে দুইটি ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহ হয় কাস্টম কর্মকর্তাদের। নাটকীয়ভাবে সিরাজ পালিয়ে গেলেও তার ব্যাগ থেকে ১৬ কেজি ১শ গ্রাম স্বর্ণ ও ১০০টি মোবাইল ফোন সেট জব্দ করেছে ঢাকা কাস্টম হাউস। বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। কাস্টম  হাউসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অথেলো চৌধুরী জানান, স্বর্ণ চোরাচালানের গোপন খবর থাকায় কাস্টম হাউসের প্রিভেন্টিভ টিম বিমানবন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করছিল। শনিবার  সকাল ১১টার দিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ( ফ্লাইট নম্বর এসকিউ ৪৪৮)  এসেছিলেন সাইফুল ইসলাম। তার সেই ব্যাগেজ দুটি নিতে দুপুর ১টার দিকে আসেন সিরাজ। গ্রীণ চ্যানেলে কাস্টম কর্মকর্তারা সিরাজের কাছে ব্যাগেজের তথ্য জানতে চান। তখন সিরাজ জানান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রটোকলের ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছেন। কাস্টম কর্মকর্তারা ব্যাগ স্ক্যান করতে বললে তিনি অসহযোগিতা করেন।

ব্যাগেজের মালিক সম্পর্কে জানতে চাইলে সিরাজ কাস্টম কর্মকর্তাদের জানান, ব্যাগের মালিক ভিআইপি যাত্রী এবং তিনি বিমানবন্দরের ভি আইপি লাউঞ্জে অবস্থান করছেন।

অথেলো চৌধুরী জানান, কাস্টম কর্মকর্তারা সিরাজের কাছে যাত্রীর পাসপোর্ট দেখতে  চান। তখন সিরাজ জানান,  ভিআইপি যাত্রী পাসপোর্টসহ ভিআইপি লাউঞ্জে অবস্থান করছেন। ব্যাগেজ চেক করার কথা জানালো হলে মোবাইল ফোনে কথা বলা শুরু করেন সিরাজ। একপর্যায়ে কথা বলতে বলতে সিরাজ ভিআইপি লাউঞ্জের দিকে এগিয়ে যান। কিন্তু, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার  পর কাস্টম কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন তাদের ধোকা দিয়ে পালিয়েছেন সিরাজ নামের ওই ব্যক্তি। অপেক্ষার পরে  বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ব্যাগ দুইটি খোলা হলে মোবাইলের প্যাকেটের ভেতর ১০০ গ্রাম ওজনের ১৬১টি  স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। একইসঙ্গে ১০০টি শাওমি ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনসেটও পাওয়া যায়।

কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী বলেন, ‘‘সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের তথ্যমতে ব্যাগের মালিক সাইফুল ইসলাম। অন্যদিকে ‍যিনি ব্যাগেজগুলো নিতে এসেছিলেন তার নাম সিরাজ। বিমানবন্দরের ‘ভিআইপি পাস ইস্যু রেজিস্টার’  ভিআইপি প্রটোকল দেওয়ার জন্য তার নামে পাস ইস্যুর তথ্য ছিল।’’

অথেলো চৌধুরী বলেন, ‘এই আটকের ঘটনায় দি কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এবং স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট, ১৯৭৪ অনুযায়ী চোরাচালানের অভিযোগে যাত্রী সাইফুল ইসলাম ও প্রটোকলে থাকা ব্যক্তি সিরাজের নামে মামলা দায়ের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে কেন সিরাজ নামের ব্যক্তিকে ভিআইপি পাস দেওয়া হয়েছিল জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও কল রিসিভ করেননি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক।