সাইন্সল্যাবে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে অংশ নেওয়া সিটি কলেজের শিক্ষার্থীর ফাহিম আলম বুধবার (২০ মার্চ) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আবরার মারা গেছে, তার নামে ফুটওভারব্রিজ বানাচ্ছেন। কিন্তু, কয়টা ফুটওভারব্রিজ বানাবেন? প্রতিদিন এতো মানুষ গাড়িচাপায় মারা যাচ্ছে। তাদের সবার নামেই কি ফুটওভারব্রিজ বানাবেন? একদিন তো সারা দেশ ফুটওভারব্রিজে ভরে যাবে।’
আন্দোলনে থাকা আরেক শিক্ষার্থী এই উদ্যোগের প্রতি বিদ্রূপ করে বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় সারা দেশে এতো মানুষ মারা যাচ্ছে, তাদের জন্য “বাংলাদেশ” নামে একটি ফুটওভারব্রিজ বানানো হোক।’
গত ১৯ মার্চ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা গেট এলাকায় ‘সুপ্রভাত’ নামে একটি বাসের চাপায় আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হন। এ ঘটনার পর ঘাতক বাস সুপ্রভাত পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল, চালকের ফাঁসি-সহ আট দফা দাবিতে নানা স্লোগান দিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সেগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি ঘটনাস্থলের পাশে আবরারের নামে একটি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের ঘোষণা দেন।
সে ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার (২০ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে ফুটওভারব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এ সময় মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও বিইউপির উপাচার্য মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী উপস্থিত ছিলেন।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর শিক্ষার্থী রাশেদ ইসলাম বলেন, ‘আবরারের জীবনের বিনিময়ে ফুটওভারব্রিজ। আমরা এমন ওভারব্রিজ চাই না। স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করুন।’
এদিকে, বুধবার (২০ মার্চ) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নগর ভবনে মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে বিইউপির শিক্ষার্থীরা তাদের চলমান আন্দোলন ২৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেছেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মেয়র বলেন, ‘আমরা আজ (বুধবার) সকালে প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটে একটি ফুটওভারব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি।’ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুপ্রভাত পরিবহনের সব বাস চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে জাবালে নূরের সব বাস চলাচল যেন স্থগিত করা হয় সেজন্য আমি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ’র) চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়েছি। তাছাড়া যাচাই-বাছাই করে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ঢাকা শহরের প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফুটওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস, জেব্রা ক্রসিং, স্পিড বেকার, রোড সাইন ইত্যাদি স্থাপনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা প্রকাশ করা এবং ৩০ দিনের মধ্যে যাতে তা দৃশ্যমান হয় সেজন্য কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।