হেলিকপ্টার থেকে পানি ফেলে দেওয়ার কারণ

হেলিকপ্টার থেকে পানি ঢালা হচ্ছেবনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং আটকে পড়াদের উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ চলাকালে ভবন থেকে দূরে দুবার বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে পানি পড়ে যেতে দেখা যায়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে দুটি যৌক্তিক কারণেই পানি ফেলে দিতে হয়েছিল বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।

সাধারণ জনগণ এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথা ও সমালোচনা করে। এ প্রসঙ্গে আইএসপিআর বলছে, ভুলবশত নয়, ওভারলোড হওয়ার কারণে একবার এবং ফায়ার সার্ভিসের রেসকিউ অভিযান যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য দ্বিতীয়বার পানি ফেলে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ২১তলা বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট আগুন নেভানো ও হতাহতদের উদ্ধারের কাজ করে। বেলা ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং উদ্ধার অভিযানে বিমানবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি পাঁচটি হেলিকপ্টার অংশ নেয়।

ভবনটির ছাদে আটকে পড়াদের রশি ফেলে টেনে হেলিকপ্টারে তুলে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে হাতিরঝিল থেকে হেলিকপ্টারে করে পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন বিমানবাহিনীর সদস্যরা।

বাম্বি বাকেটে পানি নিয়ে যাচ্ছে হেলিকপ্টারবিমানবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, হেলিকপ্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকা পানি ধরে রাখার জন্য ব্যবহৃত বস্তুটি ‘বাম্বি বাকেট’ (Bambi Bucket) নামে পরিচিত। যার ধারণ ক্ষমতা ৩,০৭৮ লিটার। এই পরিমাণ পানি নিয়ে এসে ভবনের উপর ফেলা হয়। যাতে করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এভাবে হাতিরঝিল থেকে পানি নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে দুবার হেলিকপ্টারের বাম্বি বাকেট থেকে পানি ফেলে দিতে হয়েছিল পাইলটকে। আর এ দৃশ্য দেখে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচাল মো. নূর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, একবার ওভারলোড হওয়ার কারণে পানি ফেলে দিতে হয়েছিল। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ওজন নিয়ে হেলিকপ্টারটি উড়তে পারবে, এটার একটা ক্যাপাসিটি আছে। ওজনের ভারসাম্য রক্ষার্থেই তা করা হয়েছিল। দ্বিতীয়বার ঘটেছিল ফায়ার সার্ভিসের রেসকিউ কাজে যাতে বাধা না ঘটে সেজন্য। তারা বলছিল, হেলিকপ্টার আসার পর বাতাসের কারণে রেসকিউ করতে সমস্যা হচ্ছে। এজন্য ভবন থেকে দূরে পানি ফেলে দেওয়া হয়েছিল এবং ওখানে আর পানি নিয়ে যায়নি, ফিরে এসেছে।

উল্লেখ্য, এফ আর টাওয়ারের এ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন। তাদের মধ্যে একজন বাদে বাকি সবার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট আগুন নেভানো ও হতাহতদের উদ্ধারের কাজ করে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, রেড ক্রিসেন্টসহ ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত অনেক স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধার কাজে অংশ নেন। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর সন্ধ্যা ৭টায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়।

ছবি: বাংলাদেশ বিমান বাহিনী

ভিডিও লিংক:

https://www.facebook.com/baf.mil.bd/videos/2392508514100989/?t=44

https://www.facebook.com/baf.mil.bd/videos/785460615158093/?t=24

 

আরও পড়ুন:
এফ আর টাওয়ারের মালিক ২৪ জন

পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এফ আর টাওয়ার

এফ আর টাওয়ারে নিহত যারা

আমাকে মাফ করে দিও!

ঈদে বাড়িতে আসার কথা ছিল রুমকি-মাকসুদার

এখন কে বলবে, মা তুমি ওষুধ খেয়েছো?

এফ আর টাওয়ারে প্রবেশ করেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা