সেই আবজালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিলো দুদক

আবজাল হোসেন

কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের যন্ত্রপাতি কেনার নামে সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরখাস্ত হিসাবরক্ষক আবজাল হোসেন, পরিচালক আবদুর রশীদ, আবজালের স্ত্রী রুবিন খানমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুদক কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।  দুদকের  উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য মামলা অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজে আবজাল ও তার সিন্ডিকেটের দুর্নীতি অনুসন্ধান করে দুদকের চার সদস্যের  একটি টিম।

প্রসঙ্গত, গত  ১৮ মার্চ আবজালের উত্তরার ও বাড্ডার বাড়ি, ফ্ল্যাট  ক্রোক করে দুদক।  একইদিনে  ঢাকার বাইরে থাকা তার সম্পদও ক্রোক করা হয়।  এর আগে মামলার তদন্তের সময় ক্রোকের ঘটনা ঘটলেও অনুসন্ধান পর্যায়ে কোনও ব্যক্তির সম্পদ ক্রোকের ঘটনা এটাই প্রথম।

গত ২১ জানুয়ারি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবজাল ও রুবিনার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক, হস্তান্তর বা লেনদেন বন্ধ এবং ব্যাংক হিসাবের লেনদেন জব্দের আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত।

প্রথম অভিযান চালানো হয় উত্তরার  ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কের ৪৭ নম্বরের ‘তামান্না ভিলা’ নামের বাড়িটিতে।  পাঁচ তলা বিশিষ্ট এই বাড়ির পঞ্চম তলাতেই থাকতো আবজাল ও তার পরিবার। ক্রোকের সময় পঞ্চম তলায় তাদের ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ ছিল। তামান্না ভিলায় আটটি পরিবার ভাড়া থাকে।  মালামাল ক্রোকের সময় আবজাল ও স্ত্রী রুবিনা খানম বাড়িতে ছিল না।  জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় তারা।

এর আগে  তাদের বিদেশ গমনেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।  ৭ জানুয়ারি পুলিশের বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারের (ইমিগ্রেশন) আবেদনের কারণে আবজাল দম্পতির বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

দুদকের অনুসন্ধানে আবজাল ও রুবিনার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দরপত্র জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের প্রমাণ মিলেছে। ৩০ হাজার টাকা বেতন পেলেও উত্তরা ও বাড্ডায় রয়েছে তার পাঁচটি বাড়ি ও একটি ফ্ল্যাট।  অস্ট্রেলিয়াতেও তার একটি বাড়ি আছে।  দেশের বিভিন্ন এলাকায় আছে তার ২৪টি প্লট ও ফ্ল্যাট, আছে বাড়ি ও মার্কেট।

সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে গত ১০ জানুয়ারি আবজালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,  আবজাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের একশ্রেণির কর্মকর্তার সঙ্গে সিন্ডিকেট গড়ে তোলে।  তার স্ত্রীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের নামে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে যন্ত্রপাতি সরবরাহের দরপত্রে অংশ নিতো  এই সিন্ডিকেট।  দরপত্র আহ্বান ও কাজ পাওয়া সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতো আবজালের সিন্ডিকেট।