ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ এক হাজার কিলোমিটার দূরে, আঘাত হানতে পারে শনিবার

বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’

সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ এখন গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এটি যেভাবে এগিয়ে আসছে, তা অব্যাহত থাকলে শুক্রবার (৩ মে) আঘাত হানবে ভারতে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে। তারপর উপকূল ঘেঁষে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে চলে যাবে। সেক্ষেত্রে ঝড়টি শনিবার (৪ মে) খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

বুধবার (১ মে) আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক ছামছুদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, গতিপথ পরিবর্তন করলে ঝড়টি সরাসরি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে। তখন খুলনা সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এলাকায় ওপর দিয়ে বয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’।

ঝড়টির অবস্থানের প্রসঙ্গে আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। ঝড়টি বুধবার (১ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর বা উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, রংপুর হয়ে দিনাজপুরের দিকে যেতে পারে। সেইসঙ্গে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে আঘাত হানতে পারে।’  

প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল সাগরে এই ঝড় সৃষ্টি হয়। গত পাঁচদিনে এটি শক্তি সঞ্চয় করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। এদিকে, বুধবার (১ মে) দুপুর থেকে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বরের পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর। দূরবর্তী সাগরে মাছ শিকারের ট্রলার ও নৌকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় শেল্টারহাউসগুলো প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।