পাটমন্ত্রীর অপসারণ চাইলো শ্রমিক লীগ

জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পাটমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলেন বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের নেতারা

পাটকল পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর অপসারণ চেয়েছে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ। সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন সংগঠনটির নেতারা।

এসময় শ্রমিকদের এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে ধর্মঘটে যাওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন পাটকল শ্রমিক লীগের এসব নেতা। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৩০ অক্টোবর প্রতিটি মিল গেটে শ্রমিক সমাবেশ। এছাড়া ২ ও ১৮ নভেম্বর প্রত্যেক পাটকলে শিফটে বিক্ষোভ, ১২ নভেম্বর বিজিএমসির প্রধান কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ও ১৩ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অভিমুখে মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে কারখানায় ধর্মঘট ও আন্দোলন করা হবে।

শ্রমিকদের পক্ষে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. মাহবুবুর আলম বলেন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী একজন মুক্তিযোদ্ধা ও বীরপ্রতীক। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী। মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী হিসাবে তাকে আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু, পাটশিল্প পরিচালনায় উনি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থতার দায় নিয়ে তার পদত্যাগ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার অপসারণ চাইছি। আমরা অচিরেই এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবো।

তিনি বলেন, আমরা মন্ত্রীর সঙ্গে এ পর্যন্ত যতবার দেখা করেছি ততবার মন্ত্রী বলেছেন আমাদের পাটকল সরকার আর চালাবে না। আপনাদের পাওনা দিয়ে দেওয়া হবে। আর পাটকল পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) দেওয়া হবে। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পাটপণ্যকে কৃষিপণ্যের মর্যাদা দিয়ে সুযোগ-সুবিধা দিতে। তার মানে প্রধানমন্ত্রী পাটশিল্প বাঁচাতে চান আর পাটমন্ত্রী এ শিল্প ধ্বংস করতে চান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, 'সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি কমিশন-২০১৫ রোয়েদাদ রাষ্ট্রায়ত্ত সব খাতের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন হলেও বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিকরা এখনও বঞ্চিত। তাই পাটকল শ্রমিকরা মজুরি কমিশন-২০১৫ বাস্তবায়ন চায়। সংবাদ সম্মেলনে এই দাবিসহ ৯ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন তারা। এর মধ্যে রয়েছে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বিমার বকেয়া পরিশোধ, পাটশিল্পকে কৃষিশিল্পের মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, অব্যবস্থাপনায় মজুত করা প্রায় ৬৭৩ কোটি টাকার পাট বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা, চাকরিরত অবস্থায় মারা যাওয়া শ্রমিকদের পরিবারকে আইন অনুযায়ী ৩৬ মাসের বেতন পরিশোধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ফরাজী নজরুল ইসলাম, মোহম্মদ আলী, আক্তারুজ্জামান, হেমায়েত উদ্দিন আজাদী প্রমুখ।