ধানমন্ডিতে বাসায় দুই নারীর গলাকাটা লাশ

ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রারাজধানীর ধানমন্ডি থেকে দুই নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ১৫ নম্বরের একটি বাসা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল লতিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

নিহত দুজন হলেন গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম (৬৫) ও গৃহপরিচারিকা দিতি (১৬)। 

এ ঘটনায় বাড়িটির ইলেক্ট্রিশিয়ান বেলায়েত ও  আফরোজা বেগমের জামাইয়ের পিএস বাচ্চুকে আটক করেছে পুলিশ।

বাড়িটির নিরাপত্তাকর্মী নুরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আফরোজা বেগমের স্বামীর নাম হিরণ শেখ। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। এই বাড়ির চার ও পাঁচতলায় তাদের দুটি ফ্ল্যাট। চারতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন আফরোজা ও গৃহকর্মী দিতি। উপরের ফ্ল্যাটে থাকতেন তার মেয়ে দিলরুবা সুলতানা ও জামাই মনির উদ্দিন তারিম। শুক্রবার বিকাল ৩টায় আফরোজা বেগমের জামাই মনিরের পিএস বাচ্চু এক নারীকে নিয়ে বাসায় আসেন। ওই নারী বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করার কথা বলে বাচ্চুর সঙ্গে ওপরে যায়। এরপর ৬টার দিকে বাচ্চু একবার লুঙ্গি পরে নিচে নামে। এর কিছুক্ষণ পর ওই নারী চলে যায়। তারপর বাচ্চুও প্যান্ট-শার্ট পরে চলে যায়। তারপর ওপর থেকে আমাকে একটা ছেলে ফোন দিয়ে জানায় খালাম্মা মারা গেছে। এরপর লোকজন আসে।’

আফরোজা বেগমনিরাপত্তাকর্মী আরও বলেন, ‘নতুন গৃহকর্মী যখন বাসা থেকে এসে বের হয়ে যাওয়ার সময় তাকে যেতে দেবো কিনা জানতে আমি ইন্টারকমে আফরোজা বেগমের বাসায় ফোন দিই। কিন্তু ওই বাসার ইন্টারকম নষ্ট ছিল। পরে তার মেয়ের ইন্টারকমে ফোন দিলে কেউ রিসিভ করেনি। এরপর গৃহকর্মী বেতন কম তাই কাজ করবে না জানিয়ে চলে যায়। তার হাতে কোনও ব্যাগ ছিল না। আসার সময়ও কোনও ব্যাগ ছিল না।’
তবে পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ফ্ল্যাটের আলমারি খোলা ও এলোমেলো ছিল। কিছু জিনিসপত্র খোয়া যেতে পারে। ঘটনার পর সিআইডির ক্রাইম সিন আলামত সংগ্রহ করার জন্য ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেছে। 

আফরোজা বেগমের গাড়িচালক অলি বলেন, ‘আমি বাসায় ছিলাম না, বাইরে ছিলাম। বাসা থেকে খবর দেওয়ার পর আমি এসে এই অবস্থা দেখতে পাই। তাদের দুজনের লাশ দুটি কক্ষে পড়ে ছিল।’

আফরোজা বেগমের মেয়ে দিলরুবার গৃহকর্মী রিয়াজ বলেন, ‘আফরোজা বেগম ফোন ধরছিলেন না তাই দিলরুবা ম্যাডাম আমাকে পাঁচতলা থেকে চারতলায় গিয়ে দেখে আসতে বলেন। আমি গিয়ে দেখি, আফরোজা বেগম ফ্লোরে পড়ে আছেন, রক্ত মাখা। আমি দৌড়ে ওপরে গিয়ে বিষয়টি জানাই। তখন বাসার অপর গৃহকর্মী আপেল ও দিলরুবা ম্যাডামও চারতলায় আসেন। তখন তারা নতুন গৃহকর্মীকে খুঁজছিলেন। কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। দরজা খোলা ছিল। তিনতলা পর্যন্ত ফ্লোরে রক্তমাখা পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া যায়।’
আফরোজা বেগমের জামাই শিল্পপতি মনির উদ্দিন তারিম বলেন, ‘বাসা থেকে মোবাইল ও স্বর্ণালংকার খোয়া গেছে।’