লিখিত বক্তব্যে সঞ্জীব দ্রং বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে চা বাগান সম্প্রসারণ করার নামে ঝিমাই চা-বাগান কর্তৃপক্ষ নানারকম অপচেষ্টার মাধ্যমে আদিবাসীদের জায়গা জমি দখলের পাঁয়তারা করছে। এমনকি পুঞ্জির ৭২টি আদিবাসী খাসিয়া পরিবারকে তারা একপ্রকার অবরুদ্ধ অবস্থায় রেখেছে। এসব পরিবারের লোকজনদের চলাফেরার প্রধান রাস্তাটি চা বাগান কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে রেখেছে। অথচ রাস্তা উন্নয়নের জন্য এই আদিবাসীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে খাসিয়াদের পক্ষ থেকে চা বাগান মালিক, স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের প্রতিনিধির কাছে বারবার আবেদন জানালেও কোনো সুরাহা মিলেনি।
তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ গত ১২ নভেম্বর ঝিমাই পুঞ্জির নির্মাণাধীন একটি গির্জার কাজে ব্যবহৃত টাইলস ও মালামাল নিয়ে চা বাগানের ভেতরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দিয়ে তাদের মারধর করে।
তিনি দাবি করেন, খাসি পুঞ্জির আদিবাসীদের অস্তিত্বকে গোপন করে কেদারপুর টি কোম্পানি লিমিটেডকে সরকার যে বন্দোবস্ত প্রদান করেছে তা বাতিল করতে হবে, বন্দোবস্ত প্রদানের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, ঝিমাই পুঞ্জিবাসীর প্রধান সড়কে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও বাধা প্রদানের জন্য চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাপার সহ-সভাপতি ড. আবদুল মতিন বলেন, সরকার সবসময়ই আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে বলে জানায়। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে কিছুই করে না, নির্লজ্জের মতো চুপ থাকে। সরকারের এমন আচরণ মেনে নেওয়ার মতো নয়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা খুশী কবির বলেন, আমি আদিবাসীদের দাবিগুলোর সঙ্গে একমত হয়ে সরকারের কাছে দাবি জানাই, চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং আদিবাসীদের দাবিগুলো অবিলম্বে মেনে নেওয়া হোক। তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
সংবাদ সম্মেলনে এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মোহাম্মদ নিজামুল হক, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, এএলআরডি নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা এবং ঝিমাই পুঞ্জির মন্ত্রী রানা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, কাপেং ফাউন্ডেশন, ইন্ডিজেনাস পিপল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস, কুবরাজ আন্তঃপুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠন, গবেষণা ও উন্নয়ন কানেক্টিভ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, নিজেরা করি এবং এলএআরডি।