পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ

পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেশ কটি সংগঠন বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে নতুন সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।

পাহাড়ি-বাঙালির সব সম্প্রদায়কে নিয়ে এক ও অভিন্ন লক্ষ্যে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’ নামে নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই সংগঠন তাদের বিস্তারিত তুলে ধরে।

এসময় সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয় - পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের স্বার্থ রক্ষায় নবগঠিত সংগঠনটি কাজ করবে। পাশাপাশি পাহাড়ে সব অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে শান্তি ফিরিয়ে আনাই সংগঠনটির লক্ষ্য বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য অধিকার ফোরামসহ অন্য সংগঠনের কার্যক্রম বিলুপ্ত ঘোষণা করে এই পরিষদ গঠন করে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার আলকাস আল মাসুদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় যেমন পার্বত্য এলাকায় কতিপয় নেতাদের ইন্ধনে সাধারণ জনগোষ্ঠীকে ভুল পথে পরিচালিত করা হয়, ঠিক একইভাবে ১৯৭১ সালেও মহান স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয় এ গোষ্ঠী। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ১৯৭৪ সালে ঠুনকো অজুহাতে শান্তিরক্ষী বাহিনীর মতো একটি পাহাড়ি জঙ্গি সংগঠনের জন্ম হয়। ৮০ এর দশকেও তারা পার্বত্য অঞ্চলকে এক বিভীষিকাময় করে তোলে। তারা এর মাধ্যমে পার্বত্য এলাকাকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং অঞ্চলটিতে এগিয়ে নিতে সরকার সেখানে মেডিক্যাল কলেজ, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা উদ্যোগ নেয়। সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক হলেও স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। সেখানে অবস্থানরত নিরাপত্তা বাহিনী নিয়েও নানা অপপ্রচার করে আসছে। আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের জ্বালাও-পোড়াও, চাঁদাবাজি, হত্যার ঘটনায় পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে হতাশা তৈরি করে।

মাসুদ বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠনের হাত থেকে রক্ষা করা এবং নির্যাতিত সব মানুষের পাশে দাঁড়াতে কাজ করবে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’। আমরা পাহাড়ে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের সম-অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে যাবো। আজ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য অধিকার ফোরামসহ অন্য সংগঠনের কার্যক্রম বিলুপ্ত করা হলো। একইসঙ্গে পাহাড়ি-বাঙালির সব সম্প্রদায়কে নিয়ে এক ও অভিন্ন লক্ষ্যে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’ নামে নতুন সংগঠনের নাম ঘোষণা করছি। এ সংগঠনের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে থাকবে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ’ ও ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী পরিষদ’।

সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর কবির ও সদস্য সচিব মামুনসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।