৬ এনজিও’র নাম থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সরানোর নির্দেশ

আদিবাসী নাম পরিবর্তন করতে ৬টি এনজিওকে চিঠি এনজিও ব্যুরোর

যেসব বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) নামের আগে ও পরে ‘আদিবাসী’ শব্দ লেখা রয়েছে আগামী বছরের ১৮ জানুয়ারির মধ্যে তা পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো। এরইমধ্যে এমন ছয়টি এনজিওকে চিঠিও দিয়েছে সংস্থাটি। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানিয়েছেন ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম।

‘আদিবাসী’ নামে নিবন্ধনকৃত এনজিওগুলোর নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে’ শিরোনামে গত ১৮ ডিসেম্বর দেওয়া এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পরিচালক শীলু রায় স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৩ (ক) অনুযায়ী এ দেশে আদিবাসী নামে কোনও জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা হয়নি। তাছাড়া বৈশ্বিক আদিবাসী রাজনীতির অংশ হিসেবে এক শ্রেণির দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল আইএলও কনভেনশন ১৬৯-এ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো ও তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার রয়েছে-যা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়াও আদিবাসী শব্দটি বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতায় জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও হুমকি। এসব কারণে সকল আদিবাসী নামধারী এনজিওগুলোর নাম পরিবর্তন করা আবশ্যক। এ অবস্থায় যেসব সংস্থার নামের যে অংশের সঙ্গে ‘আদিবাসী বা ইনডিজিনাস’ রয়েছে তাদের আগামী এক মাসের মধ্যে নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে অনুরোধ করা হলো।’

এ ছয়টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে তিনটির নাম জানা গেছে। এগুলো হচ্ছে আদিবাসী উন্নয়ন সংস্থা, আদিবাসী ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এডিও) ও আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘আদিবাসী’ বিষয়ে ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রের মাধ্যমে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠী উপজাতি ও অ-উপজাতি (বাঙালি) হিসেবে দুই ভাগে বিভক্ত। ২০১৫ সালেও একই বিষয়ে পরিপত্র জারি করে আদিবাসী শব্দটি অসাংবিধানিক হিসেবে উল্লেখ করে সতর্ক করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বেসরকারি অন্তত ৬টি সংস্থার (এনজিও) নামের সঙ্গে আদিবাসী শব্দটি রয়েছে। তাদের চিঠি দিয়ে নাম পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়ে এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে তারা আবেদন না করলে তাদের কারণ দর্শাও নোটিশ দেওয়া হবে। তাদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইবো কেন তারা নাম পরিবর্তনের আবেদন করলো না। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের সংবিধান, সরকারের সার্কুলারগুলো, সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত রয়েছে এ বিষয়ে। তাই আমরা নিয়মানুযায়ী তাদের কাছে জবাব চাইবো এবং পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।