মুক্তিযোদ্ধাদের বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ করতে সিপিবির সমাবেশে হামলা: আদালতে বিচারক

আদালতে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি

‘আসামিরা এদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বাক স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করতে সিপিবির সমাবেশে হামলা চালিয়েছিল’— সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা মামলার রায় ঘোষণাকালে এ কথা বলেন।

বিচারক আরও বলেন, ‘আসামিরা এদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বাক স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করতে এ হামলা চালিয়েছিল। হরকাতুল জিহাদের (হুজি) সদস্যরা মনে করে, কমিউনিস্ট পার্টির লোকজন ইসলামের শত্রু। তাই তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এ ঘটনা ঘটান।’

বিচারক রবিউল আলম বলেন, ‘জঙ্গিদের প্রতিটি বোমা হামলায় প্রতিনিয়ত নিরীহ অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ মহান আল্লাহ তায়ালা ধর্মের নামে কাউকে হত্যা করার কথা বলেন নাই।’

সোমবার সকালে এ মামলার রায়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এ মামলায় দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো—মুফতি মঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মহিবুল মুত্তাকিন, আমিনুল মুরসালিন, নূর ইসলাম, মুফতি আব্দুল হাই ও মুফতি শফিকুর রহমান। আর খালাসপ্রাপ্ত দুই জন হলো—মো. মশিউর রহমান ও রফিকুল ইসলাম মিরাজ।

এর আগে সোমবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে কারাগারে থাকা চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালতের এজলাসে সকাল সাড়ে ১০টায় তাদের হাজির করা হয়। 

রায় পড়া শেষ হয় সকাল সাড়ে ১১টায়। এরপর আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবির সমাবেশে দুর্বৃত্তরা বোমা হামলা করে। এতে পাঁচ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হন। ওই ঘটনায় সিপিবির তৎকালীন সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এসব ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়ার পর ২০০৫ সালে মামলাটি আবারও তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়। তদন্তের পর ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মৃণাল কান্তি সাহা। পরের বছর ২১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন (চার্জগঠন) করেন আদালত।